কক্সবাজারের টেকনাফে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে অপহৃত ২ জন। আজ শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে এরা ছাড়া পায়। তারা হলেন উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী এলাকার মৃত উলা মিয়ার ছেলে নজির আহমদ ও তার ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন।
অপহৃত এ দু’জন ফিরে এলেও শনিবার সকালে হ্নীলা মরিচ্যাঘোনা এলাকার একটি পেয়ারা বাগান থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্হানীয় মৃত আবদুল গফুরের ছেলে মোহাম্মদ শফিক(৩০)কে। তার পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।
এর আগে অপহৃত ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী ও মরিচ্যাঘোনা এলাকায় এই অপহরণের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ওই ৫ জন ভোরে ধানচাষ ও ক্ষেতে কাজ করতে যান। এ সময় ৭-১০ জন সেখান থেকে ৫ জনকে অপহরণ করে। অপহরণকারীরা ৫ জনের প্রত্যেকের জন্য ৫ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে।
টাকা না পেয়ে তারা কৃষক শাহাজাহানকে গুলি করে। এছাড়া আবু বক্কর ও মেহেদী হাসানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে অপহরণকারীরা। পরে কৃষকদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শাহাজাহানের বাবা আবুল মঞ্জুর বলেন, “আমার ছেলে শাহাজাহান পাহাড়ের পাদদেশে ধানক্ষেত পাহারা দিতে গেলে সশস্ত্র অপহরণকারীরা তাকেসহ ৫ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে।”
এদিকে, আজ শনিবার দুপুরে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা নজির আহমদ ও ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন জানান, তাদেরকে বেশ মারধর করা হয়েছে। বর্তমানে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা সুস্থ হয়ে আইনী প্রদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, তার এলাকার কৃষকদের ক্ষেত-খামার রক্ষণাবেক্ষণের কারণে গহীন পাহাড়ে যেতে হয় ধানক্ষেত থেকে ৫ কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে। ৩ জন কৌশলে ও ২ জন ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন। তবে আজকে শনিবার আবার আরো একজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে অপহরণকারীরা।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, “স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছি। এরপর পুলিশি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে সকলে ফিরে এসেছে বলে জেনেছি। তবে এখনো এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।”