টেকনাফে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা!

টেকনাফ প্রতিনিধি | সোমবার , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ at ১০:০৪ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফে মোহছেনা আক্তার সুমি(১৬) নামের মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শয়ন কক্ষে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের কথিত প্রেমিক দাবি করে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে ব্যর্থ হয়ে অপপ্রচার এবং সামাজিকভাবে হেয়পন্ন করায় নিরুপায় হয়ে সুমি আত্মহত্যা করেছে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।

এই অপমৃত্যু নিয়ে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। তবে এ ঘটনায় কথিত প্রেমিক উধাও হয়ে গেছে।

আজ সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ১নং ওয়ার্ড আলী আকবর পাড়ায় জাফর আলম বাইট্টার মেয়ে মোহছেনা আক্তার সুমির শয়নকক্ষে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

পরে বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে বিকালে টেকনাফ মডেল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম সর্ঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর মরদেহ নিয়ে যায়।

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, “স্থানীয় মেম্বার বশির আহমদ বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে। এই ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এলাকার মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।”

টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আব্দুল আলিম বলেন, “প্রেমঘটিত বিষয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা অবহিত হয়েছি। মরতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী প্রবাসী ভূলু মিয়ার পুত্র মুজিবুর রহমান ভোতাইয়ার সাথে এই সুমির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই মধ্যে ভোতাইয়া সুমিকে বিয়ে করার জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু সুমির মা-বাবা ভূট্টোর সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। এতে ভোতাইয়া ক্ষুদ্ধ হয়ে যাদুমন্ত্রের আশ্রয় নেয় এবং বিভিন্ন কটুক্তির মাধ্যমে সুমিকে অপমাণিত করতে থাকে। এরই মধ্যে হ্নীলা পানখালীর দুবাই প্রবাসী এক ছেলের সুমিকে বিয়ের জন্য দেখতে যায়। সুমির মা-বাবা পারিবারিক সম্মানের কথা বিবেচনা করে তার সাথে বিয়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করেন।

এই সুযোগে প্রেমিক ভোতাইয়া পানখালীর সুমির হবু শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে গিয়ে তাদের সম্পর্কের কথা জানায়। সেই কথা সুমির পরিবারে জানানোর পর বিয়ে ভেঙে যায়। এতে সুমি চরম অপমানবোধ করে এবং বাবা-মায়ের নিকট হতে গালমন্দ শোনে। সে চিঠি পাঠিয়ে প্রেমের সম্পর্কের অজুহাতে তাকে ও তার পরিবারকে অপমাণিত করার কারণ জানতে চায় মুজিবুর রহমান তোতাইয়ার কাছে। এতে ভোতাইয়া ক্ষুদ্ধ হয়ে সুমিকে মাতাল করার জন্য যাদুমন্ত্রসহ বিভিন্ন অপপ্রচারের আশ্রয় নেয়। সুমির মা-বাবা সম্মান রক্ষার্থে সুমিকে বাড়ির নিজ কক্ষ হতে বের হওয়ার জন্য নিষেধ করে। সকালে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে উঁকি দিয়ে দেখলে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তারা। এই ঘটনার পর কথিত প্রেমিক মুজিবুর রহমান ভোতাইয়া পলাতক রয়েছে।

নিহতের পিতা জাফর আলম বলেন, “লম্পট মুজিবুর রহমান ভোতাইয়ার জন্য আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে আমাদের একা করে চলে গেছে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘চলে যাচ্ছি আর আসব না’
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে