টেকনাফে পানিবন্দি চার শতাধিক পরিবার

টানা ভারী বৃষ্টি । জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননের দাবি

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার | রবিবার , ২৯ জুন, ২০২৫ at ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন সেন্টমার্টিন এবং হ্নীলায় অন্তত চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে বা ভারী বৃষ্টি হলে পানি অপসারণের নালা না থাকায় এমন নাকাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সেন্টমার্টিনে শতাধিক পরিবার ও হ্নীলার পূর্ব রঙ্গিখালীতে অন্তত তিনশ পরিবার রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভুক্তভোগী লোকজন। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের ভেতরে চলাচলের রাস্তার পাশে পানি চলাচলের ড্রেনের ব্যবস্থা নেই। ফলে অতিভারী বৃষ্টি হলে বা সাগরে জোয়ারের পানি বাড়লেই লোকালয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়ে। নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি সরে যেতে পারে না। এতে দিনের পর দিন পানিবন্দি হয়ে থাকে ঘরবাড়ি। তিনি জানান, এখন বর্ষার মৌসুম, টানা ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দ্বীপের চারটি গ্রামের শতাধিক বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি দ্রুত সরে না যাওয়ায় লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, ইউনিয়নের পূর্ব রঙ্গিখালী এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই আবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে অন্তত ৩০০ পরিবারের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বছরের পর বছর ধরে অল্প বৃষ্টিতেই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খাল ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে টানা এক ঘণ্টা বৃষ্টিতেই এলাকা প্লাবিত হয়; ঘরবাড়ি ডুবে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মূল সমস্যা হচ্ছে ড্রেন ও স্লুইসগেট। দ্রুত খাল খননসহ এগুলোর স্থায়ী সমাধান না করলে আজীবন কষ্টে দিন পার করতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলে আসলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেই। তারা বলেন, আমরা আর শুধু ত্রাণ চাই না, চাই স্থায়ী সমাধান। প্রয়োজন হলে নিজেরাও শ্রম দিতে রাজি আছি। তবে সরকারিভাবে খাল খনন ও স্লুইসগেট বড় করার ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ওই এলাকায় পানির আগ্রাসনের সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। প্রতি বর্ষায় এই সমস্যা নিয়ে চরম বেকায়দায় রয়েছে অন্তত তিনশ পরিবারের লোকজন। আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর কয়েক দফা পরিদর্শন করেছি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন মহলকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, ভারী বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে দ্রুত পানি সরে যেতে না পেরে ১০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের জন্য ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা করছি। ভারী বৃষ্টি হলে দ্বীপে পানি জমে যাওয়ার বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় সেটা চেষ্টা করা হবে। অন্যদিকে হ্নীলায়ও বহু বসতি পানিবন্দি রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাদের জন্যও জরুরি সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা
পরবর্তী নিবন্ধখেজুরের বিচি গায়ে পড়া নিয়ে বিতণ্ডা, রুমমেটের হামলায় মহেশখালীর যুবক নিহত