টেকনাফে দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্রের কারখানা

ডাকাত সর্দারসহ গ্রেপ্তার ৬ বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

টেকনাফ ও রামু প্রতিনিধি | রবিবার , ২০ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালী এলাকার দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্র তৈরীর কারখানা ও ডাকাত দলের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। এসময় ফয়সাল বাহিনীর প্রধান ফয়সাল উদ্দিনসহ (৪০) ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি হ্নীলা রঙ্গিখালী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে।

গত শুক্রবার রাতে এ অভিযান চালায় র‌্যাব১৫ এর একটি দল। গ্রেপ্তার অন্য পাঁচ ডাকাত হলেন টেকনাফ পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়ার নজির আহম্মদের ছেলে মো. বদি আলম ওরফে বদাইয়া (৩৫), একই এলাকার বাছা মিয়ার ছেলে মো. সৈয়দ হোসেন (৩২), পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার মৃত বনি আমিনের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসন (৩৫), দক্ষিণ আলীখালীর জানে আলমের ছেলে মো. কবির আহাম্মদ (৪৩) ও উলুছামারি কুনারপাড়ার জাহিদ হোসেনের ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৬)। অভিযানে ডাকাত দলের অস্ত্রের কারখানা থেকে দুটি একনলা লম্বা বন্দুক, চারটি এলজি, একটি অর্ধনির্মিত এলজি, সাত রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১০ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি আগুন জ্বালানোর মেশিন, দুটি লেদ মেশিন, দুটি বাটাল, একটি শান দেয়ার রেত, দুটি লোহার পাইপ, দুটি প্লাস, একটি কুপি বাতি এবং তিনটি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজার র‌্যাব১৫ সদর দপ্তরে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান উপঅধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক। তিনি বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা অঞ্চলের গহীন পাহাড়ে একাধিক ডাকাত চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রটি দীর্ঘদিন স্থানীয় ও অন্যান্য এলাকা থেকে আগত পর্যটকদের নানাভাবে হয়রানিসহ খুন, অপহরণ ও ধর্ষণ জাতীয় অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। র‌্যাব শুরু থেকেই তাদের গতিবিধি এবং অবস্থান নজরদারিতে রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে র‌্যাব১৫ এর একটি দল টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ে অভিযান চালায়। সেখানে অভিযানের সময় চোখে পড়ে অস্ত্র তৈরীর কারখানা। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা গুলি ছোড়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ফয়সাল বাহিনীর প্রধান ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে আরও পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক জানান, ফয়সাল ডাকাতের নেতৃত্বে ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হয়। এছাড়াও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়াতে সেখানে গড়ে তুলে অস্ত্র তৈরীর কারখানা।

জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল জানায়, নানা অপরাধের পাশাপাশি ডাকাত দলের সদস্যরা টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে রঙ্গিখালীর গহীন পাহাড়ে তাদের আস্তানায় বন্দী করে ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত ভিকটিমের ওপর চালানো হত পৈশাচিক নির্যাতন। ফয়সালের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণসহ টেকনাফ থানায় তিনটির অধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত বদি আলম ওরফে বদাইয়ার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধে টেকনাফ থানায় ১৪টি, মো. কবির আহাম্মদের বিরুদ্ধে দুটি, মো. সৈয়দ হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি, মো. দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাজে লাগছে না বন্দরের তিনটি জেটি
পরবর্তী নিবন্ধবহিঃশক্তির রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত হয়ে লাভ নেই