মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে চারটি পণ্যভর্তি ট্রলার তাদের জলসীমানা থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি আটকে রেখেছে বলে দাবি করেছেন টেকনাফের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুটি এবং শুক্রবার দুটিসহ চারটি পণ্যভর্তি ট্রলার তাদের জলসীমানায় আটকে রেখেছে আরাকান আর্মি। ট্রলার চারটি এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে বলে ওই দেশের ব্যবসায়ীরা মুঠোফোনে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া নামক জলসীমানা এলাকায় বাংলাদেশের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে তল্লাশির অজুহাতে আটক করা হয়। ট্রলারগুলোতে আচার, শুঁটকি, সুপারি, কপিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল রয়েছে। বর্তমানে ট্রলার চারটি মিয়ানমারের খায়েন খালী খালের ভিতরে নিয়ে নোঙর করে রাখা হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রলারগুলো ছাড়া হয়নি। তবে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিয়ানমারের টংগু এলাকা থেকে একটি কাঠভর্তি কার্গো ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে নোঙর করেছে। ওই ট্রলারটিতে আরাকান আর্মির লোগোর সম্বলিত ও স্বাক্ষরিত কাগজপত্র রয়েছে।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর পুরো মংডু টাউন নিয়ন্ত্রণ বা দখলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আরাকান আর্মির পতাকা তোলা হয়। এরপর ১৭ডিসেম্বর প্রায় এক বছর পরে ১৯ মেট্রিক টন চাল নিয়ে মংডু টাউন থেকে একটি ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেন। এরপর থেকে আবারও পণ্য আসা বন্ধ হয়ে যায় টেকনাফ স্থল বন্দরে।
সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি মিয়ানমারের মংডু টাউন থেকে ৩৫০বস্তা ফেলন ডাল নিয়ে একটি ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে জেটিতে এসেছিল।
টেকনাফের ব্যবসায়ী শওকত আলী চৌধুরী বলেন, সে দেশের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন মংডু টাউন আরকান আর্মির দখলে থাকায় তার পাশ দিয়ে আসা প্রতি ট্রলার থেকে মোটা অঙ্কের টাকার জন্য তারা আকিয়াব ও ইয়াঙুন বন্দর থেকে আসা ট্রলারগুলো তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। তাদের ম্যানেজ করে টেকনাফ স্থলবন্দরে আকিয়াব ও ইয়াঙুন বন্দর মালামাল পরিবহন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে স্থল বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেড টেকনাফের মহাব্যবস্থাপক মো জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে গত ২দিনে ৪টি পণ্যবাহী কাগো ট্রলারকে মিয়ানমারের জলসীমানা নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকা থেকে মাঝিমাল্লাসহ আরাকান আর্মির হেফাজতে নেওয়া হয়। তবে তা ছাড়িয়ে নিতে সেদেশে ব্যবসায়ীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানতে পেরেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, মিয়ানমারের জলসীমানা থেকে আরাকান আর্মি চারটি ট্রলারকে তাদের হেফাজতে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে আমাদের করার কিছু নেই। তবে আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।