বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু হলেও দুবাইয়ের টিকেট না পাওয়ায় কয়েক হাজার প্রবাসী চরম বেকায়দায় পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, অনেকের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। অনেকেরই আকামার মেয়াদ চলে যাচ্ছে। কিন্তু টিকেটের অভাবে তারা যেতে পারছেন না। গতকাল শত শত প্রবাসী ষোলশহরস্থ বিমান অফিসে বিক্ষোভ করেছেন। তারা অবিলম্বে তাদের টিকেটের সংস্থান করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা-দুবাই ফ্লাইট চালু হলেও টিকেটের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার প্রবাসী টিকেট পাচ্ছেন না। আবার বিমানবন্দরে কোভিড টেস্ট নিয়েও বিরাজ করছে সংকট। এসব সংকটে পড়ে প্রবাসীরা যেতে পারছেন না কর্মস্থলে। গতকাল কয়েকশ প্রবাসী ষোলশহর দুই নম্বর গেটস্থ বিমান অফিসে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল থেকে তারা বিমান অফিস চত্বরে জড়ো হয়ে তাদের টিকেটের সংস্থান করার দাবি জানান। এই সময় তারা ‘করুনা চাই না, টাকা দিয়েছি, এখন যাওয়ার সুযোগ চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। দৈনিক আজাদীকে একাধিক প্রবাসী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে বিমান অফিসে এসে টিকেটের জন্য ধর্ণা দিচ্ছেন। একজন অন্যজনকে দেখান। কিন্তু টিকেট পাচ্ছেন না। তারা বলেন, বিমান অফিসের কর্মকর্তারা একজন বলেন ওই নম্বরে ফোন করেন, অন্যজন বলেন এই নম্বরে ফোন করুন। আর এভাবে ফোনে ফোনে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। কেউ ফোন ধরেন তো কেউ ফোন ধরেন না। ভয়াবহ এই অবস্থায় আমরা আমাদের চাকরি নিয়ে শংকিত। তারা বলেন, করোনাকালে কাজে যেতে পারি নি। ফ্লাইট ছিল না। একটি কারণ দেখাতে পারতাম। এখন ফ্লাইট চলছে। মানুষ প্রমোদ ভ্রমণে যাচ্ছে। অথচ আমরা রেমিটেন্স যোদ্ধারা কাজে যেতে পারছি না। আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য এবং চাকরি সবই হুমকির মুখে পড়ছে। একাধিক প্রবাসী এই হয়রানির অবসান দাবি করে বলেছেন, আমরা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার যোগান দিই, অথচ আমাদের ব্যাপারে সবাই উদাসীন।
তারা বলেন, দুবাই-আবুধাবির কয়েক হাজার যাত্রী বাংলাদেশ বিমানের টিকেট নিয়ে দেশে এসেছিলেন। তারা ফিরতি টিকেট কিনে দেশে আসেন। করোনাকালে যেতে পারেননি। এখন বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট চালু করলেও তাদের ফিরতি টিকেটের ব্যবস্থা করছে না। এমিরেটস যাত্রী পরিবহন করলেও বিমান টিকেটের ক্রাইসিস তৈরি করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেন প্রবাসীরা। তারা বলেন, বাংলাদেশ বিমান যদি টিকেটের সংস্থান করতে না পারে তাহলে আমাদের টাকা ফেরত দিক। আমরা অন্য ফ্লাইটে কর্মস্থলে চলে যাবো। ২০ হাজার টাকার টিকেট ৭০ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছিল বলেও তারা জানান। এত টাকা দিয়ে টিকেট কিনেও সময়মতো ফিরতে না পারায় তারা চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন।
কয়েকশত প্রবাসীর বিক্ষোভের মুখে বিমান অফিসের একজন কর্মকর্তা হ্যান্ড মাইক নিয়ে এসে তিন চারদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে উল্লেখ করে বলেন, আপনারা অনেক ধৈর্য্য ধরেছেন। আর ৩/৪টি দিন ধৈর্র্য্য ধরেন। আমরা আপনাদের টিকেটের সংস্থান করে দেবো। তবে ওই কর্মকর্তা নিজের পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান।