কোভিড–১৯ এর কার্যকর একটি টিকা সহজলভ্য হওয়ার আগেই প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ২০ লাখে পৌঁছাতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ না নেওয়া গেলে মৃত্যুর এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে, বলেছেন ডব্লিউএইচও’র জরুরি কর্মসূচির প্রধান ড. মাইক রায়ান। শুক্রবার জেনেভায় ডব্লিউএইচও’র সদরদপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেছেন। খবর বিডিনিউজের।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে আবির্ভূত হওয়ার পর গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ৯ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর এখনকার যে ট্রেন্ড, তাতে কয়েকদিনের মধ্যেই এ সংখ্যা ১০ লাখ অতিক্রম করবে। এখন উত্তর গোলার্ধের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ‘দ্বিতীয় ঢেউয়ের’ তীব্রতাও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই আশঙ্কা করছেন। বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে এখন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিলেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যাশবোর্ড অনুযায়ী, শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বে যে ৩ কোটি ২৪ লাখের বেশি শনাক্ত কোভিড–১৯ রোগী মিলেছে, তার প্রায় অর্ধেকই এ তিন দেশের। সামপ্রতিক দিনগুলোতে ইউরোপজুড়ে সংক্রমণের পুনরুত্থান দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় মহামারীর ‘প্রথম ঢেউয়ের’ মতো এবারও বিভিন্ন দেশ লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। ‘সব মিলিয়ে বেশ বড় অঞ্চলজুড়েই কোভিড–১৯ রোগের উদ্বেগজনক উত্থান দেখতে পাচ্ছি,’ ইউরোপে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ট্রেন্ডের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন ড. রায়ান।
কার্যকর একটি টিকা সহজলভ্য হওয়ার আগে কোভিড–১৯ এ মৃত্যু ২০ লাখের ঘর ছুঁতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ কর্মকর্তা টিকা পাওয়ার আগেই বিশ্বজুড়ে এ পরিমাণ মানুষের মৃত্যু ‘অসম্ভব নয়’ বলে মন্তব্য করেন। কোভিড–১৯ রোগের চিকিৎসার যত উন্নতি হবে, মৃত্যুর হার তত কমে আসবে বলেও আশাবাদ তার। কিন্তু উন্নত চিকিৎসা এমনকী কার্যকর একটি টিকাও মৃত্যু ২০ লাখের ঘর ছাড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে যথেষ্ট নাও হতে পারে। এ সংখ্যা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কি নিয়েছি আমরা? প্রশ্ন ছুঁড়েছেন ড. রায়ান। কোভিড–১৯ নিয়ন্ত্রণে সম্ভব সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি তিনি আহ্বানও জানিয়েছেন। ‘আমরা যদি তা না করি, তাহলে আপনারা যে সংখ্যার কথা বলছেন, তা সম্ভব। দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনকভাবে বলতেই হচ্ছে, এমনটা হতে পারে,’ বলেছেন ডব্লিউএইচও’র এ জরুরি কর্মসূচির প্রধান।