টানা বৃষ্টিতে আনোয়ারায় স্থবির হয়ে পড়েছে কোরবানির পশুর হাট। বাজারে ক্রেতার দেখা নেই বললেই চলে। ক্রেতাশূন্য বাজারে বেপারিদের হতাশ দেখা গেছে। তীব্র বৃষ্টির কারণে অনেকে হাটে পশু এনে সন্ধ্যার আগেই আবার গোয়ালে ফিরিয়ে নিয়েছেন। এদিকে বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও ঠান্ডাজনিত রোগের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও ওজন কমছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এতে করে গৃহস্থ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে জানা গেছে। গতকাল আনোয়ারা উপজেলার মালঘর বাজার, হাজিরহাটসহ বিভিন্ন হাট বাজার অনেকটা ক্রেতা–বিক্রেতা শূন্য দেখা গেছে। স্থানীয়রা গত ১৫/২০ বছরের মধ্যে এমন পরিস্থিতি দেখেনি বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়, কুরবানির ঈদের ৪/৫ মাস আগে থেকে বাড়তি লাভের আশায় খামারিরা বিভিন্ন প্রজাতির গরু মহিষ ছাগল লালনপালন করে থাকেন। আর রাত জেগে পাহারা দিয়ে কুরবানির বাজারে বিক্রির প্রহর গুণতে থাকেন। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া ও ঝড়বৃষ্টির কারণে গবাদি পশু বিক্রি ও কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া নিয়ে শংকায় আছেন অন্তত ২০ হাজারেরও বেশি গৃহস্থ, খামারি ও বেপারীরা।
আনোয়ারা পানি সম্পদ অফিসের তথ্যমতে কুরবানির জন্য ৫৬ হাজারের বেশি স্থানীয় খামারি ও গৃহস্থরা গবাদি পশু প্রস্তুত করেছেন। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে কয়েক শত বেপারী দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গবাদি পশুর যোগান দিয়ে থাকেন। বরুমচড়া ইউনিযনের বাসিন্দা আবু জাফর জানান, কুরবানির গরু নিয়ে গৃহস্থরা সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে বাজারে গরু বেচাকেনা হচ্ছে না। এদিকে বৃষ্টি ও ঠাণ্ডার কারণে গরুর নানান অসুখও দেখা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে গরু নিয়ে বড় দুঃচিন্তায় পড়েছি আমরা গৃহস্থরা।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পশুর হাট তৈলারদ্বীপ সরকার হাটেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এই হাটের ইজারাদার ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ জানান, গত কয়েকদিনে স্বাভাবিক বাজারের চেয়েও অনেক কম গবাদি পশু বিক্রি হয়েছে। গত বছরও এ হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় ছিল। এ সময়ে রেকর্ড পরিমাণ গরু, মহিষ, ছাগল বিক্রি হবার কথা থাকলেও ঝড় বৃষ্টির কারণে বেচাকেনায় ধস নেমেছে। এতে আমরা ইজারাদারসহ, গৃহস্থ ব্যাপারীরা ক্রেতা বিক্রেতা সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
আনোয়ারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া জানান, আনোয়ারায় প্রায় ৫৬হাজাররের বেশি কুরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার বিপরীতে চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৫৩ হাজারের মতো। বৃষ্টির কারণে গৃহস্থ ব্যাপারি, খামারি সবাই বিপাকে পড়েছেন। গবাদি পশু নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ঠাণ্ডাজনিত কারণে নানা ধরনের রোগবালাই সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, আবহাওয়ার উন্নতি হলে শেষের দিকে বাজার জমে উঠবে।