টানা তৃতীয় দিনেও দরপতন

পুঁজিবাজার

| বুধবার , ৩১ জুলাই, ২০২৪ at ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

আগে থেকেই অস্থির সময় পার করা পুঁজিবাজারে নতুন করে দরপতন শুরু হয়েছে; সবশেষ পাঁচ দিনের মধ্যে চার দিনই বড় পতন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। গতকাল মঙ্গলবারও দিনের শুরু থেকে বেশির ভাগ শেয়ার দর হারিয়ে লেনদেনে এলে সূচক কমতে থাকে, যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে প্রধান সূচক কমে যায় ৬০ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচক কমে নেমেছে ৫ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে। আগের দিনও সূচক কমেছিল ৫৩ পয়েন্ট। এ নিয়ে টানা তিন দিন সূচক কমেছে প্রধান বাজারে। এতে পুরনো লোকসান আরও ভারী হয়েছে বিনিয়োগকারীদের; যার মধ্যেও থেমে নেই কম দামে শেয়ার বিক্রি। খবর বিডিনিউজের।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আরও কমতে পারে এমন আতঙ্কেই মূলত শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে সূচক নিম্নমুখী হয়ে পড়ছে। সবার মধ্যেই মনস্তাত্বিক এ বিষয় কাজ করায় তা প্রভাব ফেলছে অস্থির বাজারে। এর কারণ হিসেবে অনেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভাটা পড়ায় সামনের দিনের অর্থনীতি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত থাকার কথা বলছেন। এটিই আসলে আতঙ্ক তৈরি করেছে অনেকের মাঝে।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার মত অর্থনীতিতে কিছু নেই। সার্বিক অবস্থা এরকম খারাপ বেশি দিন থাকবে না। তিনি বলেন, এখনও বাজারে ভালো মানের অনেক শেয়ার আছে, যা বাজারদরের চেয়ে অনেক কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ভালো হলে এসবের দাম এত নিচে থাকবে না।

ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, অর্থনীতির সার্বিক সূচকগুলোর প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়তে শুরু করেছে। এসময়ে বিনিয়োগকারিদের আস্থা ধরে রাখতে না পারলে ভবিষ্যতেও তাদের বাজারমুখী করা কঠিন হবে।

শাহাদাত হোসেন নামে এক ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বলেন, কয়েকটা বাদে আমার পোর্টফলিওর সব শেয়ারই লোকসানে। কিছু বেচে নতুন শেয়ার কেনার ইচ্ছা ছিল। সেজন্য বাজার বুঝতে ব্রোকারেজ হাউজে গিয়েছিলাম, দেখি বড়রা ট্রেডিং (শেয়ার কেনাবেচা) করছে শুধু। সামনে কী হয় তা বুঝতে পারছি না, তাই বেচে দিলাম কম লোকসানে থাকা শেয়ারগুলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেখা যাবে।

মঙ্গলবার বেশির ভাগ শেয়ার দর হারানোতে ডিএসইতে লেনদেনে আসা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৪০টির দর কমে যায়। বেড়েছে মাত্র ২৫টির ও আগের দরে লেনদেন হয় ৩২টির।

এদিন সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু একটানা কমতে থাকে সূচক। এর প্রভাব দেখা যায় লেনদেনেও। দিন শেষে এ বাজারে লেনদেন হয় ৪৩২ কোটি ৬৯ লাখ টাকার। আগের দিন হয়েছিল ৪৫০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সিংহভাগ শেয়ারের দর পতনে ডিএসইর প্রধানের সঙ্গে অন্য দুই সূচকেও বড় পতন দেখা যায়। আগের দিনের চেয়ে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫১ পয়েন্ট ও ডিএস৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট হারিয়ে ১ হাজার ৮৮১ পয়েন্ট হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত গণজাগরণ মঞ্চের
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের ঋণমান কমাল এসঅ্যান্ডপি