আন্তর্জাতিক কার্ডের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ে ‘টাকা–পে’ কার্ড চালুর মাধ্যমে নিজস্ব কার্ড যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বালাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় গণভবন থেকে এ কার্ডের উদ্বোধন করবেন। ডেবিট কার্ড দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে ক্রেডিট ও আন্তর্জাতিক কার্ড তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ডিসেম্বরে ‘টাকা–পে’ কার্ডের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে ডুয়েল কারেন্সি বা দ্বৈত মুদ্রা ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
‘টাকা–পে’ কার্ড উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ‘টাকা–পে’ কার্ড এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম লেনদেন করবে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।
ব্যাংক খাতের নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সেখানে অংশ নেওয়া ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, ‘টাকা–পে’ কার্ড চালুর সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
‘টাকা–পে’ কার্ডের মত ভারতের রয়েছে ‘রুপি কার্ড’। একইভাবে শ্রীলঙ্কার ‘লঙ্কা–পে’, পাকিস্তানের ‘পাক–পে’, এবং মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবের ‘মাদা–কার্ড’ নামে নিজস্ব কার্ড রয়েছে। এবার ‘টাকা–পে’ চালুর মধ্য দিয়ে সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশও।
টাকা–পে কার্ড হল এক ধরনের ডেবিট কার্ড। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ব্যাংক ইস্যু করতে পারবে। নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। এই কার্ডের মাধ্যম প্রচলিত কার্ড (ভিসা, মাস্টার) এর মত লেনদেন করতে পারবেন গ্রাহকরা। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা খরচ করছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। আগামী ডিসেম্বরে ডুয়েল কারেন্সি বা দ্বৈত মুদ্রা ব্যবহারের সুবিধা যুক্ত হলে ‘টাকা–পে’ কার্ডের মাধ্যমে ভারতীয় মুদ্রা রুপিও ব্যবহার করতে পারবেন বাংলাদেশিরা।
দ্বিপক্ষীয় লেনদেন চালু করতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক ইন্ডিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মাধ্যমে টাকা ও রুপি বিনিময় করতে ‘টাকা পে’ কার্ড ডুয়েল কারেন্সি কার্ড এ পরিণত হবে।
প্রসঙ্গত, ‘টাকা–পে’ কার্ড পরিচালিত হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর মাধ্যমে। ফলে এই কার্ড যে কোনো এটিএম বুথে সহজে লেনদেন করা যাবে। সেক্ষেত্রে দ্রুত ও নির্বিঘ্নে লেনদেন করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এই কার্ডের মাধ্যমে প্রচলিত কার্ডের চেয়ে খরচ অন্তত ৫–৬ শতাংশ কম হবে। তবে আসলে কী প্রভাব পড়ল তার ‘টাকা–পে’ কার্ড চালু হলেই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।