টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়া ৮২ বছর বয়সী সেই পরিচিত মুখ বিলকিস বেগম। বিলকিস টানা ১০১ দিন ছিলেন শাহিনবাগের ওই ধরনা মঞ্চের সামনে।
করোনা ভাইরাস মহামারি সতর্কতায় গত ২৪ মার্চ ধরনা তুলে দেয় পুলিশ। এরপর বাড়ি যান বিলকিস। এই সময়ে বিলকিস ভারতজুড়ে সবার কাছে পরিচিতি পান ‘দাদি’ হিসেবে। সেই দাদিকেই ২০২০ সালের সেরা ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় রেখেছে বিখ্যাত এ ম্যাগাজিন।
প্রতি বছরই রাজনীতিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের মধ্যে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে এ তালিকা করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ ম্যাগাজিন। চলতি বছরের শত প্রভাবশালীর তালিকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বলিউড তারকা আয়ুষ্মান খুরানার নামও আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ তালিকায় দাদি বিলকিসের নাম আসায় ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধীরা ব্যাপক উচ্ছ্বসিত। শাহিনবাগে মুসলিম নারীদের যে দলটি শান্তিপূর্ণভাবে সিএএ বিরোধী কর্মসূচি পালন করেছিল, বিলকিস ছিলেন তাদের মুখ্য একজন।-বাংলানিউজ
টাইম ম্যাগাজিনে বিলকিসের প্রোফাইল লিখেছেন ভারতীয় সাংবাদিক ও লেখক রানা আইয়ুব। বিলকিসকে তিনি বর্ণনা করেছেন ‘প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে’। তালিকাটির আইকন ক্যাটাগরির ১৬ নম্বর অবস্থানে রয়েছেন বিলকিস বেগম।
শাহিনবাগেই বাড়ি বিলকিসের। স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১৫ বছর আগে। দুই সন্তানের কাছেই থাকেন তিনি। তার নেতৃত্বেই অসংখ্য ‘দাদির’ সমাগম ঘটেছিল শাহিনবাগে। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল বিলকিসের কথা। এরপরই অসংখ্য বৃদ্ধা ঘর থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন।
বিশেষ বিশেষ দিনে তার বক্তৃতা ঝড় তুলে দিতো শাহিনবাগের ওই চত্বরে। ২৬ জানুয়ারি সকালে রোহিত ভেমুলার মাকে নিয়ে ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন দাদি। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে তার সাক্ষাৎকার।
তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘মোদী-অমিত শাহ, আপনারা দেশের শাসক। সব ক্ষমতা আপনাদের হাতে। ভয় দেখিয়ে সবাইকে থামিয়ে দিতে চান আপনারা। কিন্তু আমায় পারবেন না। যতদিন প্রাণ আছে, আমি বলে যাব। একাই লড়ে যাব। ’
শাহিনবাগে গুলিবর্ষণের মুহূর্তে মঞ্চে বসেছিলেন দাদি। বলেছিলেন, ‘আসলে মানুষের আন্দোলনের চাপে ওরা ভয় পেয়েছে। তাই এভাবে দূর থেকে গুলি ছুড়ে ভয় দেখাতে চাইছে। ’