পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হবার পর কেউ ভাবেনি আমাদের এই ভূখন্ডে নতুন করে অধিকার অর্জনের জন্য আরো একটি আন্দোলন গড়ে উঠবে। কিন্তু একজন তা ভেবেছিলেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রে জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক অনেক বড় নেতারা যখন বিকল্প কিছু ভাবতে পারেন নি তখন থেকেই ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুধাবন করতে পেরেছেন হবে না। পূর্ব বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করতে হবে।সেই থেকে তিনি উচ্চারণ করেন ” বাংলাদেশ’। তিনি ধীরে ধীরে সারা বাংলায় মানুষের মাঝে তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন, ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে থাকে মুক্তির স্বপ্ন। আসে স্বাধীনতার সনদ ৬ দফা -আসে উত্তাল ঊনসত্তুর- ‘৭০ এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের ভুমি ধ্বস ভোট, ম্যান্ডেট। তারপর শুধু পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর জনগনের রায়ের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ঘাতকতার ইতিহাস। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সংসদে বসার অধিকার হরনের ইতিহাস, পশ্চিমা শাসক বুনে চলছিল বাঙালির উপর অন্যায্য দমনের ষড়যন্ত্র। কিন্তু না- আমাদের সৌভাগ্য এই বাংলার মাটিতে জন্ম -নিয়েছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি মুজিব। যিনি দেশভাগের পরই বাঙালির মুক্তির পথে হেঁটেছিলেন। বাংলার পথে প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে বাঙালির বুকের গভীরে মুক্তির স্বপ্নের চাষ করেছিলেন। মাথা মোটা পাকিস্তানী শোষকেরা ও তাদের বিদেশি বন্ধুরা ভাবতেই পারেনি বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধু র নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগন ঐক্যবদ্ধ মৌচাক। অর্থাৎ দীর্ঘ বহূ বছরের গড়ে ওঠা এ আন্দোলন। হঠাৎ আকাশ থেকে পড়া কোন ঘটনা নয়, নয় শুধু ঘোষণা পাঠ। এই আন্দোলনের পরতে পরতে টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া মুজিব। তার দিকনির্দেশনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি। এল ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ। দীপ্ত পায়ে এগিয়ে এলেন মহাকবি। শোনালেন অমর কবিতা খানি। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। তারপর শুধুই অবাক করার ইতিহাস, বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ একটি ভাষণ যেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন জয় বাংলা, যার মাধ্যমে সুনিপুণভাবে রচনা করা একটি আন্দোলনের বিস্ময়কর সফল পরিণতি। আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণ বেসামরিক যদিও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু র ডাকে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর দেশপ্রেমিক সেনারা সর্ব শক্তি দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বীরোচিত অবদান রাখেন। জীবন বিসর্জন করেন। সেই সব বীরের অবস্থান আমাদের হৃদয় গভীরে। জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, জাতীয় দিবস আমাদের শিকড়ের সন্ধান দেয়। নিয়ে যায় আমাদের সোনালী অতীত, সফল ইতিহাসে।
কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্বালে যখন দেখি যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী নয় সেই দলের নেত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লক্ষ বাঙালি র সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে,করতেই পারেন তখন যেহেতু তিনি পাকি সেনাদের অতিথি হয়ে ছিলেন তাই তার না জানাটাই স্বাভাবিক। তার স্বামী ও আমাদের জাতীয় সংগীত নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছিলেন এটা শুনলে নাকি ওনার ঘুম পায়। ইতিহাস বিকৃতি কারীর এই দল আবার ও ৭ ই মার্চ পালনের নামে নেমেছে জঘন্যতম বিকৃতিতে। যে ভাষণ আজ শুধু আমাদের নয়, বিশ্ব ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে সেখানে তাদের এই মিথ্যাচার শুধু এই দেশে ই নয় বিশ্বব্যাপীই প্রত্যাখ্যাত হবে। তারা আমাদের সযন্তে লালিত অনুভূতিকে বার বার আঘাত করতে চাইছে। তাদের রুখে দিতে হবে আবার। একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠবে বারবার, লাল সবুজের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই, আমার সোনার বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।