জ্যৈষ্ঠের মধুফলে সয়লাব বাজার

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ১৭ মে, ২০২৫ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাইয়ে এ বছর প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলন হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠাল, জাম, আম, লিচুসহ হরেক রকম মধুমাস জ্যৈষ্ঠের নানান ফলের। বাজারে সময়োপযোগী দামে খুশি ক্রেতা, বিক্রেতা ও পাইকার সবাই। তবে কদিন অতিরিক্ত তাপমাত্রা, কাল বৈশাখীর ছোবলের দরুন কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিল সকলেই। অতিরিক্ত তাপে একসাথেই পেকে যেতে শুরু করেছিল কাঠাল, জাম, লিচু ও আম। সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে জমে উঠছে চট্টগ্রামের কৃষিপ্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলার ভেজালমুক্ত আম কাঠালের মৌসুমী ফলের হাট করেরহাট। এবার করেরহাটের পাশাপাশি বেশি জমে উঠেছে খাগড়াছড়ি সড়কের হেঁয়াকো ও নারায়নহাট হাট। এছাড়া এসব হাট থেকে মীরসরাইয়ের মিঠাছরা, খৈয়াছরা, জোরারগঞ্জ এবং বারইয়াহাট বাজারে ও পাহাড়ি নানান ফলের আগমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

করেরহাট বাজারের কাঠাল বিক্রেতা ফখরুল আলম বলেন, গত বছর এ সময় ১০ হাজার টাকার কাঠাল ও বিক্রি করতে পারি নাই। এবার ইতোমধ্যেই নিজের বাগানের ২০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছি। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসে নানান মৌসুমী ফল ক্রয়ের উদ্দেশ্যে। সড়কপথে যোগাযোগ ও তুলনামূলক কম দামে পাইকারি ক্রয় বিক্রয় হয় বলে করেরহাটে মৌসুমি ফলের হাট জমজমাট থাকে। আবার বড় দারোগারহাট ও মীরসরাই, সীতাকুণ্ডের মধ্যবর্তী হাটেও আম, কাঁঠাল, জাম, লিচুর সমাহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কাঠালের পাইকার আলম মিয়া (৫৫) বলেন, এবার হেঁয়াকো ও করেরহাটে বড় জাতের ভালো কাঠাল পাওয়া যাচ্ছে। কুমিল্লায় এর চাহিদা অনেক। আশা করছি ভাল ব্যবসা হবে এবার।

মীরসরাই উপজেলার পার্বত্য প্রবেশ দ্বার করেরহাট ইউনিয়নের বড় একটি অংশ উঁচুনিচু টিলা আর পাহাড়বেষ্টিত বলে এসব ফল সহজে চাষাবাদ হয় এ এলাকায়। এর মধ্যে গ্রীষ্মকালীন নানা জাতের ফল চাষাবাদ, বাজারজাত ও বিক্রয়ের অন্যতম একটি স্থান হলো মীরসরাই উপজেলার পাহাড় ঘেষা কয়েকটি বাজার। এছাড়া সামপ্রতিককালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠছে নানা ফল ফলাদির বাগান। এবার লিচুর ফলন বেশি একটা ভাল হয়নি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন লিচু চাষী। তবু যেটুকু ফলন হয়েছে খরচ পোষানো যেতে পারে বলে প্রত্যাশা অনেকের।

মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, এখানকার কৃষকরা বিষমুক্ত ফলই ফলান সবসময়। কিন্তু এবার প্রতিকূল প্রাকৃতিক আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও শেষের দিকে অতিরিক্ত তাপের দরুন কিছুটা চিন্তায় পড়ে চাষীরা। তবে কিছুটা বৃষ্টিপাতে স্বস্তি ফিরে আশায় কোন প্রকার লোকসানের সম্ভাবনা নেই বলা চলে। প্রাকৃতিক বৈরিতা যদি ঝাপটে না আসে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাই লেকে কমছে পানির স্তর, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪ ইউনিট বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধজনমত ছাড়া সরকার চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দিতে পারে না : সাকি