ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাবের শংকা প্রকাশ করা হয়েছে। হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার হুমকির মুখে বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে ধস নামবে। যার ধকল সামলাতে হিমশিম খেতে হবে আমদানিনির্ভর জ্বালানির উপর নির্ভরশীল বাংলাদেশকে। জ্বালানি তেল সরবরাহে সংকট তৈরি হলে এর প্রভাব পড়বে দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের জ্বালানি তেল খাত প্রায় পুরোটাই আমদানি নির্ভর। বছরে গড়ে ৭০ লাখ টনের মতো জ্বালানি তেল আমদানি করতে হয় বাংলাদেশকে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ এলএনজিও আমদানি করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে। যার বেশিরভাগই আসে হরমুজ প্রণালী হয়ে। প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ হরমুজ প্রণালী অবস্থিত পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরকে যুক্ত করেছে। এটি ইরান ও ওমানের মাঝে অবস্থিত। এই প্রণালীর এক পাশে ইরান, অন্য পাশে ওমানের মুসান্দাম উপদ্বীপ।
বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের অন্তত ২০ শতাংশ এই প্রণালী দিয়ে পরিবাহিত হয়। প্রতিদিন পরিবাহিত হয় ১৭ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল। ইরান এই প্রণালী বন্ধ করে দিলে পুরো বিশ্বেই জ্বালানি তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। ইতোমধ্যে ইরান প্রণালী বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে।
বাংলাদেশ মূলত ক্রুড অয়েল এবং রিফাইনড তেল আমদানি করে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরাক, ওমান এবং কাতার থেকে বাংলাদেশ বেশিরভাগ জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশগামী তেল ও এলএনজিবাহী জাহাজ হরমুজ প্রণালী পেরিয়েই আসে। সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক, ওমান ইত্যাদি দেশ থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্য নিতে হলে প্রথমে জাহাজগুলোকে পারস্য উপসাগর থেকে বের হতে হয়। পারস্য উপসাগর থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে হরমুজ প্রণালী। এরপর জাহাজগুলো ওমান উপসাগর থেকে আরব সাগর হয়ে ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাসরে পৌঁছাতে পারে।
জ্বালানি তেল পরিবহনে সংকট তৈরি হলে দেশের সর্বক্ষেত্রেই তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।