কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এফবি মোজাইফা আলী নামে একটি ট্রলারের জালে ১৫০টি লাল কোরাল মাছ ধরা পড়েছে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এই মাছের নাম ‘রাঙ্গাচয়’।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা মো. আবুল ফয়েজের ট্রলারে বঙ্গোপসাগরের ‘১০ বাইন’ এলাকায় মাছগুলো ধরা পড়ে। একেকটি মাছের ওজন চার থেকে পাঁচ কেজি। সবমিলিয়ে মাছের ওজন দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৭ মণ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে মাছগুলো শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ঘাটে নিয়ে আসা হয়। শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আইয়ুব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ট্রলারের মাঝি নুরুল হোসাইন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলা সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম আলী হোসেনের ছেলে আবুল ফয়েজের মালিকানাধীন এফবি মোজাইফা আলী নামে ট্রলারে ১০জন মাঝিমাল্লা নিয়ে তাঁরা সাগরে মাছ ধরতে যান। প্রথমে রাতে সাগরের ‘১০ বাইন’ এলাকায় জাল ফেলে পরেরদিন বুধরার সকালে জাল তোলা হয়।
তখন কয়েকটি রূপচান্দা ও মাইট্টা মাছ ধরা পড়ে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ওইদিন রাতে জাল ফেললে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে জেলেরা জাল টেনে তুলতেই দেখতে পান, বড় বড় লাল কোরাল ধরা পড়েছে। পরে ট্রলারে জাল তুলে দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের ১৫০টি লাল কোরাল মাছ। মাছগুলোর ওজন প্রায় ৭০০ কেজি।
ট্রলারের মালিক আবুল ফয়েজ বলেন, প্রতি মণের দাম হাকাচ্ছেন ২৫ হাজার টাকা করে চেয়েছেন। তবে আব্দুল কাদের ও নুরুল কবির নামের দুজন ব্যবসায়ী ২০হাজার টাকা করে প্রতিমণ পর্যন্ত দাম বলেছেন। ন্যায্যমূল্য না পেলে বরফ দিয়ে মাছগুলো কক্সবাজার নিয়ে বিক্রয় করা হবে বলে তিনি জানান।
শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, এখন সাগরে ইলিশ ধরার মৌসুম হলেও সেভাবে ইলিশের দেখা মিলছে না। তবে কিছু কিছু ট্রলারে লাল কোরাল ধরা পড়ছে। তাই এলাকার অধিকাংশ ট্রলার কোরাল ধরতে ছুটছেন সাগরে।
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাছটি সাধারণত ১ থেকে ৯ কেজি ওজনের হয়। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Lates calcarifer। এ মাছ উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চল বিশেষত পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেখা যায়। তা ছাড়া এশিয়ার উত্তরাঞ্চল, কুইন্সল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্ব আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলেও দেখা যায়।