ফিশিং বোট নিয়ে লুঙ্গি–গামছা পরে জেলে সেঁজে বিশাল এক ইয়াবার চালান জব্দ করেছে চকরিয়া থানার পুলিশ। টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে পাচারের সময় এই চালানে জব্দ করা হয় ১২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। চকরিয়ায় এর আগে কখনো এত বড় ইয়াবার চালান উদ্ধার বা জব্দ করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত রোববার দিবাগত রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পশ্চিমাংশের চকরিয়া–মহেশখালী চ্যানেলের বহলতলী চিংড়িজোন এলাকায় ইয়াবা উদ্ধারের এই অভিযান চালায় পুলিশ। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।
পুলিশ জানায়, টেকনাফ থেকে ইয়াবা কারবারের একটি বড় সিন্ডিকেট সমুদ্রপথে ইয়াবার চালান করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছিল। কয়েকদিন আগে থেকে শক্তিশালী সোর্স নিয়োগ করা হয় সমুদ্রপথে পাচারের অপেক্ষায় থাকা সর্ববৃহৎ এই ইয়াবার চালান জব্দ করার জন্য। রোববার দিবাগত রাতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জেলেদের পোশাক পরে চকরিয়া–মহেশখালী চ্যানেলের বহলতলী এলাকায় ফিশিং বোট নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। ভোররাতে ইয়াবার চালান বহনকারী একটি মাছ ধরার ট্রলার আসতে দেখা যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ইয়াবাভর্তি পাঁচটি প্লাস্টিকের ড্রামসহ ট্রলার ফেলে পালিয়ে যায় পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। এ সময় ট্রলারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইয়াবাভর্তি পাঁচটি ড্রাম জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে সেই ড্রাম কেটে বের করা হয় ১২৫টি পোটলা। এসব পোটলার প্রতিটিতে ১০ হাজার পিস করে সর্বমোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত একসপ্তাহ ধরে ইয়াবার এই চালান জব্দ করার জন্য পুলিশের চোখে ঘুম ছিল না। গোপন সোর্সের দেওয়া তথ্য শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর রবিবার দিবাগত রাত থেকে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য মাছ ধরার জেলে সেঁজে বহলতলী চিংড়িজোন এলাকায় ওৎ পেতে থাকে। সোমবার (গতকাল) ভোরে আসে ইয়াবার চালান জব্দের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রকীব উর রাজা দৈনিক আজাদীকে বলেন, সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান জব্দের ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে, তাদের ব্যাপারে ব্যাপক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের তৎপরতায় ইয়াবাভর্তি ট্রলার ফেলে যারা পালিয়েছে তাদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।