জেনিনে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত

অভিযান শেষের ইঙ্গিত ইসরায়েলের

| বুধবার , ৫ জুলাই, ২০২৩ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে হওয়া তুমুল লড়াইয়ে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত ও কয়েক হাজার বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার পর শহরটিতে ইসরায়েলের অভিযান প্রায় শেষ হয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উর্ধ্বতন এক সহকারী। সোমবার ভোরের আগে ড্রোনের সহযোগিতা নিয়ে কয়েকশ কমান্ডো অভিযান শুরু করে, যার প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনি প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া সব চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘও জেনিনের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানায়। খবর বিডিনিউজের।

ইসরায়েল বলছে, জেনিনের বস্তিসদৃশ শরণার্থী শিবিরে হোম অ্যান্ড গার্ডেন নামের অভিযান চালানোই হচ্ছে ইরানসমর্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মূলোৎপাটনের উদ্দেশ্যে। এই গোষ্ঠীটিই ইসরায়েলে সমপ্রতি বন্দুক ও বোমা হামলা বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে এবং তারা রকেট বানানোর প্রাথমিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ভাষ্য তেল আবিবের।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে আহত এক ফিলিস্তিনি রাতে মারা গেছে এবং মঙ্গলবার সকালে আরেকটি মৃতদেহ মিলেছে সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ এ দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ১০০ জন, যাদের ২০ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। নিহতদের মধ্যে ৪ জনকে নিজেদের যোদ্ধা বলে দাবি করেছে ইসলামিক জিহাদ। হামাসও সংঘর্ষে তাদের একজনের নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

নিহত বাকি ৫ জনের বয়স ১৭ থেকে ২৩ এর মধ্যে, তারা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য না বেসামরিক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অভিযানে যেসব লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল, সেসব অর্জন প্রায় শেষের পথে, মঙ্গলবার কান রেডিওকে একথা বলেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেবি। এর আগে সোমবার ভোররাত থেকে শুরু হয়ে দিনভর সংঘর্ষ চলার পর রাতের বেলাটা তুলনামূলক শান্ত ছিল।

অভিযানের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, যার কারণে মঙ্গলবার ইসরায়েল অধিকৃত এই এলাকায় বিভিন্ন কার্যালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তারা জেনিনের শরণার্থী শিবির থেকে ৫০০ পরিবারের প্রায় তিন হাজার সদস্যকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম তীরকে তাঁতিয়ে রাখা একের পর এক সহিংসতার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এই শরণার্থী শিবিরটি, এখানে আধা বর্গকিলোমিটারেরও কম জায়গায় প্রায় ১৪ হাজার মানুষের বাস। অভিযানের মধ্যেও শিবিরটিতে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন দাতা সংস্থা।

এসব জরুরি পরিষেবা পুনঃস্থাপনে কাজ চলছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। দেশটির সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের সীমান্ত পুলিশ শিবিরটিতে থাকা দুটি নজরদারি পোস্ট ধ্বংস করেছে এবং একটি ভূগর্ভস্থ গর্তেরও খোঁজ পেয়েছে, যেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিস্ফোরক জমা রাখতো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতেল আবিবে গাড়ি ও ছুরি হামলা হামাস বলল বীরোচিত অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধবিস্ফোরণ ঘটা সাগর নন্দিনীতে এখনও পৌনে ৪ লাখ লিটার তেল