অলীয়ে কামিল হযরত খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি (র.)’র পরিচয়: পবিত্র কুরআনের আলোকে পুণ্যাত্মা সত্যান্বেষী আল্লাহর অলীগণ আল্লাহর প্রিয়ভাজন বান্দা। খোদাভীতি নবীপ্রেম, ইবাদত বন্দেগী ও আধ্যাত্নিক সাধনার বদৌলতে তাঁরা মহান আল্লাহর প্রিয় ও অনুগ্রহ প্রাপ্ত। পবিত্র কুরআনে অলীদের মর্যাদা আলোকপাত হয়েছে, “জেনে নাও! নি:সন্দেহে আল্লাহর ওলীদের কোন ভয় নেই, নেই কোন দু:খ কষ্ট, যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহকে ভয় করেছে। (সূরা: ইউনুস, আয়াত: ৬২–৬৩)
আল্লাহ তা’আলা অপর আয়াতে ওলীদের পরিচয় ব্যক্ত করেছেন, “তাকাওয়া সস্পন্ন লোকেরাই হচ্ছে ওলী।” (সূরা: আনফাল, আয়াত: ২৩)
প্রখ্যাত তাফসীরকার হাকীকুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী (র.) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্ণনা করেন, কোন পাপিষ্ট ও ফাসিক ওলী হতে পারেনা। বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্কের যোগসূত্র হচ্ছে তাকওয়া তথা খোদাভীতি। (নুরুল ইরফান, সূরা: ইউনুস, আয়াত: ৬৩)
খাজা গরীবে নওয়াজের জন্ম ও বংশ পরিচয়: জন্ম তারিখ: ৫৩০ হিজরি, জন্ম স্থান মধ্য এশিয়ার সিস্তানের সানজার নামক স্থানে ওফাত ৬ রজব ৬২৭ হিজরি ভারতের আজমীর শরীফে। নাম: মঈন উদ্দিন হাসান, উপাধি: হিন্দাল ওলী, আতায়ে রাসূল গরীবে নওয়াজ, নায়েবে রাসূল, ওয়ারেসুল আম্বিয়া, আফতাবে চিশতিয়া, সুলতানুল হিন্দ।
তিনি রাসূলে পাকের বংশধর: তিনি পিতৃকুল ও মাতৃকুল উভয় ধারায় হাসানী ও হোসাইনী। তাঁর পৈতৃক বংশ হযরত ইমাম হোসাইন বিন মওলা আলী (রা.)’র সাথে সম্পৃক্ত, মাতার বংশ হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রা.)’র সাথে সম্পৃক্ত। মাতার বংশ হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রা.)’র সাথে সম্পৃক্ত। উভয় ধারায় তিনি সাইয়্যিদ বংশ, আউলাদে রাসূল। তার পৈতৃক বংশ পরিক্রমা, ১. সৈয়্যদ মঈন উদ্দিন হাসান ২.ইবনে সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন, ৩. ইবনে সৈয়দ কামাল উদ্দিন, ৪. ইবনে সৈয়্যদ আহমদ হোসাইন, ৫. ইবনে সৈয়্যদ নজমুদ্দিন তাহের, ৬. ইবনে সৈয়্যদ আবদুল আজীজ, ৭. ইবনে সৈয়্যদ ইবরাহীম, ৮. ইবনে সৈয়্যদ ইমাম আলী রযা, ৯. ইবনে সৈয়্যদ মুছা কাজিম, ১০. ইবনে সৈয়্যদ ইমাম জাফর সাদেক, ১১. ইবনে সৈয়্যদ মুহাম্মদ বাকের, ১২. ইবনে সৈয়্যদ ইমাম আলী জয়নুল আবেদীন, ১৩. ইবনে সৈয়্যদ ইমাম হোসাইন, ১৪. ইবনে হযরত মাওলা আলী। (খযীনাতুল আসফীয়া, খন্ড:১, পৃ: ২৫৭)
মাতার বংশ পরিক্রমা: বিবি উম্মুল ওরা, বিবি মাহেনূর, বিবি খাসসুল মালাকা বিনতে সাইয়্যিদ দাউদ বিন হযরত আবদুল্লাহ আল হাম্বলী ইবনে সায়্যিদ জাহেদ বিন সায়্যিদ মুরিস ইবনে সায়্যিদ দাউদ ইবনে সায়্যিদ মুসাজুন ইবনে সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ মাখফী ইবনে সায়্যিদুনা হাসান মুসান্না ইবনে সায়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান (রা.) ইবনে সায়্যিদুনা হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম)। (মাসালিকুস সালেকীন ২য় খন্ড, পৃ: ২৭১)
খাজা গরীবে নওয়াজের গর্ভকালীন সময় আম্মাজানের বর্ণনা: খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (রা.)’র মমতাময়ী আম্মাজান বর্ণনা করেন, আমার মঈন উদ্দিন আমার গর্ভে আসার পর আমি বড় বিস্ময়কর ভালো ভালো স্বপ্ন দেখতে পাই, ঘর বরকত ও কল্যাণে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমার শক্ররা বন্ধুতে পরিণত হয়ে গেলো। আমার পুরো গৃহ আল্লাহ পাকের নূরের আলোতে ও ঝলকে আলোকিত হয়েছে। (আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড:২, পৃ: ২৬৪)
হিন্দাল ওলীর শৈশবকাল: তাঁর শৈশবকাল ছিল বৈচিত্রময় উত্তম ও উৎকৃষ্ট চরিত্রের এক সমুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শৈশবকাল থেকেই তাঁর মধ্যে খোদা প্রদত্ত আধ্যাত্নিক ক্ষমতা বিকাশমান হতো। তিনি ছিলেন আল্লাহর বিশেষ কৃপা ও অনুগ্রহপ্রাপ্ত। তাঁরা ছিলেন দুই ভাই। (হাফতাদ আউলিয়া, পৃ: ২৮)
গরীবে নওয়াজের পিতার ইন্তিকাল: হযরত খাজা গরীবে নওয়াজের পিতা হযরত খাজা সৈয়্যদ গিয়াস উদ্দিন (র.) ছিলেন একজন অত্যন্ত ধার্মিক বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব, গরীবে নওয়াজের পনের বছর বয়সে বুজুর্গ পিতা ইন্তিকাল করেন। (মিরাতুল আসরার, পৃ: ৫৯৩)
গরীবে নওয়াজের শিক্ষা জীবন: হযরত খাজা গরীবে নওয়াজ (র.) সাত বছর বয়স পর্যন্ত খোরাসানে লালিত পালিত হন। বুজুর্গ পিতার সান্নিধ্যে ও তত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা হয়। অত:পর সানজরের প্রসিদ্ধ মাদরাসায় ভর্তি হন সেখানেই তাফসীর, হাদীস, ফিকহ শাস্ত্রে গভীর বুৎপত্তি ও পূর্ণতা অর্জন করেন। বয়স পনের বছর অতিক্রম না করতেই বুজুর্গ পিতা ইহধাম ত্যাগ করেন। বাগদাদ শরীফে বুজুর্গ পিতার মাজার মুবারক অবস্থিত। (আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড:১, পৃ: ২৬৫)
পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ: হিন্দাল ওলী পৈতৃক সূত্রে একটি বাগান ও একটি আটা পিষার যন্ত্র পেয়েছিলেন। পিতার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ থেকেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি নিজেই বাগানের পরিচর্যা ও তত্ত্বাবধান করতেন বৃক্ষরাজিতে পানি সিঞ্চন করতেন। এভাবেই তিনি সাদাসিদে অনাড়ম্ভর ও পরিশুদ্ধ জীবন যাপন করতেন, কিন্তু মহান আল্লাহ তো তাঁকে দুনিয়ার বাগান নয় ইসলামের বাগানের পরিচর্যা, ইসলামের প্রচার প্রসার বিশ্বমানবতার কল্যাণ, নৈতিকতার অবক্ষয় থেকে মানবতাকে উদ্ধার করার জন্য আল্লাহ তাঁকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন।
পীর মুর্শীদের অন্বেষণে: খাজা গরীবে নওয়াজ জাহেরী ও বাতেনী ইলমে পূর্ণতা অর্জন সত্বেও একজন মুর্শীদে কামিলের হাতে বায়আত গ্রহনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করলেন। তিনি একজন কামিল মুর্শীদ সন্ধানের প্রেক্ষাপট নিজেই বর্ণনা করেছেন যে, একদা আমি বাগদাদ শরীফে হযরত খাজা জুনাইদ বোগদাদী (র.)’র মসজিদে উপস্থিত হলাম এবং আমার পীর ও মুর্শিদ হযরত খাজা উসমান হারওয়ানীর পদধূলিতে ধন্য হলাম। আমি আমার মুর্শীদের কদমে চুমো দিলাম, এ সময় গোটা পৃথিবীর বড় বড় মাশায়েখ আউলিয়ায়ে কেরাম আমার মুর্শীদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত। আমার পীর মুর্শীদ আমাকে আদেশ করলেন, দুই রাকাআত নামায পড়ো, আমি পড়লাম, অতঃপর বললেন কিবলা মূখী হয়ে বসে যাও! আমি বসে গেলাম অতঃপর মুর্শীদ আদেশ করেন, সূরা বাকারা পড়ো আমি পড়লাম অতঃপর মুর্শীদ আদেশ করেন ২১ বার দরুদ শরীফ পাঠ করো, পাঠ করলাম অতঃপর আমার প্রিয় মুর্শীদ দাঁড়িয়ে গেলেন অতঃপর আমার হস্ত ধারণ করে আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন। অতঃপর বললেন, এসো আমি তোমাকে খোদা পর্যন্ত পৌছিয়ে দিব, অতঃপর পীর মুর্শিদ আমাকে একটি বিশেষ তুর্কী টুপি পরিয়ে দেন এবং স্বীয় বিশেষ কম্বল দ্বারা আমার শরীর আবৃত করে দেন, অতঃপর বলেন, বসে পড়, আমি সাথে সাথে বসে পড়লাম। পীর মুর্শীদের নির্দেশনা মোতাবেক আমি মুরাকাবা মুশাহাদা মুজাহাদায় নিয়োজিত রইলাম। দ্বিতীয় দিন হযরতের খিদমতে হাজির হলাম, মুর্শীদ কেবলা নির্দেশ করেন আসমানের দিকে থাকাও আমি দেখলাম মুর্শীদ কিবলা জিজ্ঞেস করলেন তুমি কতদূর পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছো? আমি বললাম আরশে আজীম পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি, অতঃপর মুর্শীদ কিবলা বললেন এখন কতটুকু পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছো? আমি বললাম “তাহতচ্ছারা” পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি, অতঃপর আমার মুর্শীদ আদেশ করেন ১০০০ বার সূরা ইখলাস পাঠ করো। আমি পাঠ করলাম, অতঃপর আমার মুর্শীদ বলেন, আসমানের দিকে থাকাও আমি দেখলাম মুর্শীদ কিবলা বললেন, এখন কতদূর পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছো? আমি বললাম, আল্লাহর মহত্বের পর্দা পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি। পুনরায় আদেশ করেন দু চক্ষু বন্ধ করলাম নির্দেশ হলো, চক্ষু খোল আমি চোখ খুললাম, তখন আমার মুর্শীদ স্বীয় দুটি আঙ্গুল আমার দৃষ্টির সম্মূখে রাখলেন, জিজ্ঞেস করেন কি দেখছ? আমি বললাম আঠার হাজার জগত দেখতে পাচ্ছি। আমার কথায় মুর্র্শীদ কিবলা সন্তুষ্ট হলেন, বললেন এখন বসো এখন তোমার কাজ সমাপ্ত হয়ে গেছে। এভাবে তিনি আধ্যাত্মিকতার উচ্চ মার্গে অধিষ্ঠিত হলেন। (আনিসূল আরওয়াহ, পৃ: ১–২)
একটু গভীর চিন্তা করুন, ভাবুন হিন্দাল ওলীর পীর মুর্শীদ হযরত খাজা ওসমান জারওয়ানীর দু’আঙ্গুলের মাঝখানে যদি আঠার হাজার জগত দেখা যায়, তাহলে হযরত সিদ্দিকে আকবর, ফারুকে আজম, উসমান জিন্নুরাইন ও মওলা আলী শেরে খোদার পীর ও মুর্শীদ “রাহমাতুল্লীল আলামীন”র পরিপূর্ণতা ও মু’জিজাতের অবস্থা কেমন হবে?
মুর্শীদের খিদমতে বিশ বৎসর: হিন্দুস্তানের রাজা আমাদের খাজা বর্ণনা করেন, আমি যখন বায়আতের শরাফতে ধন্য হলাম, আমি একাধারে বিশ বছর আমার মুর্শীদ কিবলা হযরত খাজা ওসমান (রা.)’র সান্নিধ্যে অতিবাহিত করলাম। তিনি এমন নিবিড়ভাবে পীর মুর্শীদের খিদমতে নিয়োজিত থাকতেন কোথাও দূর দূরান্তে মুর্শিদের সফর হলে পীর মুর্শীদের বিছানা পত্র খাদ্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় পাথেয় মাথায় বহন করে নিয়ে যেতেন। (সিয়ারুল আউলিয়া, পৃ: ৫৫, মিরাতুল আসরার, পৃ: ৫৫৬, আনিসুল আরওয়াহ, পৃ: ৩, আখবারুল আখইয়ার, পৃ: ২২)
গরীবে নওয়াজের নসীহত মুরীদের উদ্দেশে: হযরত খাজা কুতব উদ্দিন বখতিয়ার কাকী (র.) বর্ণনা করেন, আমার পীর ও মুর্শীদ খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী (র.) বর্ণনা করেন, ১. আল্লাহর পক্ষ থেকে যে যা কিছু অর্জন করেছে পীর ও মুর্শীদের খিদমতের বিনিময়ে পেয়েছে, পীর ও মুর্শীদের আদেশ পালন করা প্রত্যেক শিষ্যের জন্য আবশ্যক। ২. নামায ইবাদত ওজীফা সংক্রান্ত পীর মুর্শীদের পক্ষ থেকে মুরীদের জন্য যে দ্বীনি শিক্ষা নির্দেশ করা হয়, তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করা এর উপর আমল করা মুরীদের জন্য আবশ্যক। এতে মুরীদের আধ্যত্মিক উন্নতি হবে। ৩.কবরস্থানে পানাহার করা গুনাহ। যে ব্যক্তি কবর স্থানে পানাহার করে সে অভিশপ্ত মুনাফিক। কবর স্থান উপদেশ গ্রহণের স্থান। ৪. হযরত খাজা গরীবে নওয়াজ আরো বলেন, আল্লাহর শক্তির বাইরে এমন কী আছে? আল্লাহর বিধান পালন করা সকলের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহর বিধান পালনে অলসতা ও অবহেলা না করা সকলের দায়িত্ব। কায়মনোবাক্যে যা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে তা প্রাপ্ত হবে। (দলীলুল আরেফীন, পৃ: ২.১৬)
বায়তুল্লাহ শরীফে উপস্থিতি: খাজা গরীবে নেওয়াজ নিজ পীর ও মুর্শীদ খাজা উসমান হারওয়ানীর সাথে বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ ও যিয়ারতে ধন্য হয়েছেন। গরীব নওয়াজ বলেন, আমার মুর্শীদ কিবলা আমাকে মিযাবে রহমতের নীচে নিয়ে গেলেন, আমার হাত ধরে আল্লাহর দরবারে আমার জন্য দুআ করেন হে আল্লাহ! আমি মঈন উদ্দিনকে তোমার সোপর্দ করেছি। অদৃশ্য থেকে আওয়াজ এলো আমি মঈন উদ্দিনকে কবুল করলাম। আমার পীর মুর্শীদ এ আওয়াজ শ্রবণ করে অত্যন্ত খুশী হলেন এবং আল্লাহর দরবারে শুকরানা সিজদা আদায় করলেন। (আনিসুল আরওয়াহ, পৃ: ২)
রওজা শরীফে হাজিরি: গরীব নওয়াজ পীর ও মুর্শীদের সাথে হজ্বব্রত পালন শেষে মদীনা মনোওয়ারা শরীফে রওজা আকদাসে সরকারে দোআলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যিয়ারতে ধন্য হন। মুর্শীদ কিবলা আমাকে বলেন, নবীজিকে সালাত সালাম পেশ করো আমি অত্যন্ত বিনম্র আদবের সাথে সালাম আরজ করলাম। “আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ” রওজা শরীফ থেকে উত্তর এলো হে জলে স্থলে ওলীদের কুতুব, তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হউক। আমার পীর মুর্শীদ আমাকে বলেন, “হে মঈন উদ্দিন! এখন তোমার কাজ পরিপূর্ণ হয়েছে।” (আনিসূল আরওয়াহ, পৃ:২)
ওফাত: খাজা গরীবে নওয়াজ ৯৭ বৎসর বয়সে ৬ রজব ৬২৭ হিজরিতে ২১ মে ১২২৯ খ্রি. সোমবার এশার নামাযের পর নিজ হুজরা শরীফ বন্ধ করে দেন, ফজরের নামাযের সময় হলেও দরজা খোলা হয়নি লোকজন সকলে চিন্তাগ্রস্ত, পরিশেষে লোকজন ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান এ মহান অলী মাওলায়ে হাকিকী রাব্বুল আলামীনের সান্নিধ্যে চলে যান। কুদরতী ভাবে তাঁর কপাল মুবারকে আরবি ভাষায় এ বাক্যটি ভেসে উঠে “হাজা হাবীবুল্লাহ মা–তা ফী হুব্বিল্লাহ” ইন্নি হচ্ছেন আল্লাহর বন্ধু আল্লাহর প্রেমে ওফাত প্রাপ্ত হন। আল্লাহ তা’আলা এ মহান ওলীর আদর্শ আমাদের নসীব করুন। আমীন।
লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসা–এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), বন্দর, চট্টগ্রাম; খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।
মুহাম্মদ আবু তাহের মিসবাহ
নিমতলা বিশ্ব রোড, বন্দর, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর শরীয়তী নিয়ম সম্পর্কে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: জানাযা আদায়ের পর মৃত ব্যক্তিকে দাফনের জন্য কিবলার দিকে থেকে কবরে নামানো শরীয়ত সম্মত। দুই জন বা তিন জন শক্তিমান মুত্তাকী নেককার ব্যক্তি লাশ কবরে নামানোর জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। তবে মহিলার লাশ কবরে নামানোর ক্ষেত্রে মুহরিম ব্যক্তি হতে হবে। মুহরিম উপস্থিত না থাকলে নিকটাত্বীয় ব্যক্তি অথবা কোন নেককার পরহেজগার ব্যক্তি মহিলার লাশ কবরে নামাবেন। মহিলার লাশ নামানোর সময় পর্দা দিয়ে কবর ঘিরে রাখবেন। কবরে নামানোর সময় এই দুআ “বিসমিল্লাহি ওয়াবিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ” পাঠ করবেন। কবরে মৃত ব্যক্তির মুখ কিবলামুখী করে দিবেন। কাফনের বাঁধন খুলে দিতে শরীয়তে নিষেধ নেই। দাফনের পর কবরের উপরে পানি ছিটিয়ে দেয়া সুন্নাত। (আলমগীরি, খন্ড:১, পৃ: ১৬৬, বাহারে শরীয়ত, খন্ড:১ম, পৃ: ৮৪৪, ফতোওয়ায়ে রজভীয়্যাহ, খন্ড: ৯ম, পৃ: ৩৭৩)