হজ ও উমরা পালনে সাফা মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সায়ীর বিধান
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার জন্য, যিনি তাঁর সামর্থবান বান্দাদের উপর জীবনে একবার বায়তুল্লাহ শরীফের হজব্রত পালন করা ফরজ করেছেন। হজকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক করেছেন। মহান আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি, চারিত্রিক সংশোধন ও আধ্যাত্নিক উন্নয়নের এক উৎকৃষ্ট ইবাদত হজ। পবিত্র হজ ও কাবা কেন্দ্রিক রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্য ও অসংখ্য আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। আল্লাহর নিদর্শনাদির প্রতি সম্মান প্রদর্শন তাকওয়ার পরিচায়ক। আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন অংশীদার নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি আমাদের মহান নবী, দোজাহানের কান্ডারী, মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় বান্দা ও প্রিয় রাসূল। তাঁর উপর অসংখ্য দরুদ-সালাম বর্ষিত হোক। তাঁর পবিত্র বংশধরগণ, সম্মানিত সাহাবাগণ ও তাঁর পদাঙ্ক অনুসারী সত্যান্বেষী মু’মিন নর-নারীদের প্রতি অসংখ্য করুনাধারা বর্ষিত হোক।
পবিত্র কুরআনে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের বর্ণনা:
পবিত্র মক্কায় বায়তুল্লাহ শরীফের পূর্বদিকে একটি পাহাড়ের নাম সাফা, বায়তুল্লাহর উত্তরে অবস্থিত পাহাড়টির নাম মারওয়া। এ পাহাড়দ্বয়ে হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য সায়ী করা বা বিশেষ পদ্ধতিতে দৌড়ানো, হাঁটা বা প্রদক্ষিণ করা ওয়াজিব। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং যে কেউ এ ঘরের হজ কিংবা ওমরা সম্পন্ন করে তার উপর কোন গুনাহ নেই এ দুটি প্রদক্ষিণ করায় এবং যে কেউ কোন সৎকর্ম স্বতস্ফুর্তভাবে করবে তবে আল্লাহ সৎকর্মের পুরস্কার দাতা সর্বজ্ঞ।” (সূরা: বাক্বারা, আয়াত: ১৫৮)
জাহেলী যুগে সাফা ও মারওয়া পাহাড় দুটির উপর ইসাফ ও না-ইলাহ নামক দুটি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছিল। কাফিরগণ এ দুটির কদমবুচি করত, মক্কা বিজয়ের সময় প্রতিমা দুটি সরিয়ে ফেলা হয়। মুসলমানদের অন্তরে পাহাড়দ্বয়ে ইতোপূর্বে প্রতীমা থাকার কারণে এ পাহাড়দ্বয়ে সায়ী করার ব্যাপারে মুসলমানদের সংশয় দূর করার জন্য উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। এ পাহাড় দুটির উপর আল্লাহর নবী হযরত হাজেরা (আ.)’র কদম শরীফ স্পর্শ হওয়ার বরকতে পাহাড়দ্বয় আল্লাহর কুদরতের নিদর্শনে পরিণত হলো। এতে সায়ী করা গুণাহ নয় বরং সায়ী করা ওয়াজিব। [তাফসীরে নূরুল ইরফান, কৃত: হাকীমল উম্মত আল্লামা মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী (র.)]
হাদীস শরীফের আলোকে সাফা মারওয়ার সায়ী: হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন, “নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন কাজেই হজ বা উমরাকারীদের জন্য এ দুয়ের মধ্যে সায়ী করতে কোন গুনাহ নেই। (সহীহু বুখারী শরীফ, হাদীস : ১৬৪৮)
সায়ীর বিধান: সায়ী শব্দের অর্থ দৌড়ানো। পরিভাষায় সায়ী হচ্ছে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে বিশেষ পদ্ধতিতে সাত চক্কর দৌড়ানো, এটা হচ্ছে ওয়াজিব। সায়ী পায়ে হেঁটে করতে হয়, ওজর বশত বাহনের সাহায্য নেয়া যায়। বিনা ওজরে বাহন ব্যবহার করলে দম ওয়াজিব হবে।
সায়ী সহীহ হওয়ার শর্তাবলী: সায়ী সহীহ হওয়ার শর্ত ৭টি। যথা:- ১। সাফা ও মারওয়ার মধ্যখানে সায়ী করা, ২। পূর্ণ তাওয়াফ অথবা তাওয়াফের অধিকাংশ চক্কর সম্পন্ন করার পর সায়ী করা, ৩। সায়ী করার পূর্বে হজ বা উমরার ইহরাম বাঁধা, ৪। সায়ী সাফা হতে আরম্ভ করা মারওয়াতে শেষ করা। কেউ যদি মারওয়া হতে আরম্ভ করে তবে প্রথম চক্করে সায়ী হিসেবে গণ্য হবে না, ৫। সায়ী সহীহ হওয়ার জন্য তার পূর্ববর্তী তাওয়াফটি পবিত্র অবস্থায় সম্পন্ন করতে হবে, ৬। নিজেই সায়ী করা, ৭। সায়ী এর নির্ধারিত সময়ে সায়ী সম্পন্ন করা। এটি হজ্বের সায়ীর জন্য শর্ত। উমরার সায়ীর জন্য শর্ত নয়। অবশ্য যদি হজ্বে ক্বিরান বা তামাত্তু আদায়কারী ব্যক্তি উমরা পালন করে তবে তার উমরার সায়ীর জন্যও নির্ধারিত সময় হওয়া শর্ত। হজ্বের সায়ীর সময় হচ্ছে হজ্বের মাসসমূহ আরম্ভ হওয়া।
সায়ীর ওয়াজিব সমূহ: সায়ীর ওয়াজিব ৬টি। যথাক্রমে:-১। সাত চক্কর পূর্ণ করা। ২। কোন ওজর না থাকলে পায়ে হেঁটে সায়ী করা, ৩। উমরার সায়ীর ক্ষেত্রে উমরার ইহরাম সায়ী পর্যন্ত বহাল রাখা, ৪। সাফা এবং মারওয়ার মধ্যবর্তী পূর্ণ পথ সায়ী করা, ৫। সাফা হতে আরম্ভ করা মারওয়াতে শেষ করা, ৬। এমন তাওয়াফের পর সায়ী আরম্ভ করা যা জানাবাত অথবা হায়িয ও নিফাস হতে পবিত্র অবস্থায় সম্পন্ন করা হয়েছে।
সায়ীর সুন্নাত সমূহ: সায়ীর সুন্নাত ৯টি। যথা:- ১। হাজরে আসওয়াদের চুম্বন করে সায়ীর উদ্দেশ্যে বের হওয়া, ২। তাওয়াফের পর সায়ী করা, ৩। সাফা ও মারওয়ার উপরে আরোহণ করা, ৪। সাফা ও মারওয়ার উপরে আরোহন করে কিবলা মুখী হওয়া, ৫। সায়ীর চক্করসমূহ পরপর সমাপন করা, ৬। জানাবত এবং হায়িয থেকে পবিত্র হওয়া, ৭। সবুজ বাতিদ্বয়ের মধ্যবর্তীস্থানে দ্রুত চলা, ৮। এমন তাওয়াফের পরে সায়ী করা যা পবিত্র অবস্থায় সম্পন্ন করা হয়েছে, ৯। সতর ঢাকা। সতর ঢাকা সর্বাবস্থায় ফরজ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সতর ঢাকার উপর আরো অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
হাজরে আসওয়াদে ইস্তিলাম তথা চুম্বুন করা: এরপর ওমরা বা হজ পালনকারী হাজরে আসওয়াদে ইস্তিলাম অর্থাৎ সম্ভব হলে চুমু দিয়ে বা হাতের ইশারায় তাতে চুমু দিয়ে সায়ীর উদ্দেশ্যে সাফার দিকে আসবেন। মসজিদুল হারামের শেষ প্রান্তে সাফার নিকট পৌঁছে পড়বেন- “বিসমিল্লাহি ওয়াচ্ছালাতু ওয়াচ্চালামু আলা রসূলিল্লাহি রব্বিগ ফিরলী যুনূবী ওয়াফতাহ্ লী আবওয়াবা ফাদ্বলিকা, আল্লাহুম্মা আ’ছিমনী মিনাশ শায়তান।”
সাফা পাহাড়ে উঠতে দু‘আ: ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শা‘আ-ইরিল্লাহ, ফামান হাজ্জাল বায়তা আভি‘তামারা ফালা জুনা-হা আলাইহি আঁই ইয়াত্তাওয়াফা বিহিমা ওয়া মান তাতাওয়া‘আ খায়রান ফাইন্নাল্লাহা শা-কিরুন আ‘লীম।
সাফা পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে এ দু‘আটি পড়বেন। “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইয়ুহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু বিয়াদিহিল খায়র ওয়া হুয়া আ‘লা কুল্লি শায়ইন ক্বদীর।”
সাফা মারওয়ায় সায়ী করার সময় সবুজ পিলারদ্বয়ের মাঝে চলার সময়ের দু‘আ “রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতাল আ‘আযযুল আকরম।”
৮ যিলহজ্বে করণীয়: ক্বিরান ও এফরাদ হজকারী ইহরাম পরিধান করার সময় হজ ও উমরার নিয়্যত একই সাথে করেছেন। পুনরায় ইহরাম পরিধান করতে হবে না। কিন্তু তামাত্তো হজকারী ৭ যিলহজ বাদ মাগরিব বায়তুল্লাহ শরীফের হাতীমে বসে হজ্বের নিয়্যতে ইহরাম বাঁধবেন। হাতিমে না পারলে হেরেমের আশে পাশের যে কোন স্থানে ইহরাম বেঁধে নিবেন এবং ২ রাকাত সুন্নাতুল ইহরাম নামায পূর্ব নিয়মে পড়বেন। সম্ভব হলে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে মকামে ইব্রাহীমে ওয়াজিবুত তাওয়াফের ২ রাকাত নামায পড়ে নিবেন এবং নিয়্যত করবেন। “আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুল হাজ্জা ফায়াচ্চিরহু লী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।” নিয়্যত করার সাথে সাথে (পুরুষরা উচ্চঃস্বরে, মহিলাগণ চুপে চুপে) ৩ বার তালবিয়া পাঠ করবেন। “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা-শারীকা লাক।
তালবিয়া পাঠ শেষ হলেই ইহরামাবস্থা শুরু হয়ে গেল এখন থেকে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজগুলো মেনে চলতে হবে। ৮ যিলহজ ফজর নামাযের পর মিনার পথে রওয়ানা হয়ে যাবেন। মক্কা শরীফ হতে মিনায় গিয়ে অবস্থান করতে হবে। (বর্তমানে হাজ্বীগণের ভীড় বেশি হওয়াতে ৭ যিলহজ রাতে মুয়াল্লিাম গাড়ীযোগে মিনায় নিয়ে যান) খুবই সাবধানতা অবলম্বন করবেন, যেন কোন অবস্থায় ঝগড়া-বিবাদ না হয়। ইস্তিগফার, দরুদ শরীফ ও তালবিয়া বড় করে পড়তে থাকবেন। এ স্থানে হযরত আদম আলাইহিস সালাম, আল্লাহর মাহবূব, রাহমাতুল্লীল আলামীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’সহ সকল নবীগণের উপস্থিতি হয়েছে। তাই এ জায়গার সবই পবিত্র। শয়তান এখানেও আপনাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে ব্যস্ত থাকে তাই সাবধানতা অবলম্বন অপরিহার্য। ৮ যিলহজ জোহর, আছর, মাগরীব ও এশা ৯ যিলহজ্বের ফজর নামায পর্যন্ত মিনার মসজিদে খায়েফে (অপারগতায় তাবুতে) জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবেন।
৯ যিলহজ্বে করণীয়: দ্বিপ্রহর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা ফরজ। দরুদ, সালাম, যিকর-আযকার করতে থাকবেন। যত দু‘আ কালাম জানেন পড়তে থাকুন। ৯ যিলহজ ফজর নামায হতে ১৩ যিলহজ আছর নামায পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর ৩ বার করে তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব। “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।” সঙ্গী হাজ্বী ভাই-বোনদেরকেও ধর্মীয় উপদেশ দিবেন এবং এবাদতে রত থাকার জন্য পরামর্শ দিবেন। পুরুষগণ উচ্চস্বরে আর মহিলাগণ চুপে চুপে ইস্তিগফার, তাকবীর-তালবিয়া যিক্র আয্কার, দু‘আ-দরুদ ও তাকবীর পাঠ করতে করতে আরাফাতের দিকে রওয়ানা হয়ে যাবেন। বর্তমানে ভীড়ের কারণে ৮ যিলহজ রাতে মু’আল্লিমগণ হাজ্বীদেরকে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছে দেন। জোহরের সময়ে নামায আরাফার মসজিদে নিমরায় ইমামের সাথে আদায় করতে পারলে ভাল। মসজিদের ইমামের সাথে আদায় করলে ইমামের অনুসরণে জোহর ও আছর নামায পর পর একই সাথে পড়বেন। যারা মসজিদে নিমরা থেকে দুরে তাবুতে অবস্থান করবেন আমাদের হানাফী মাযহাব মতে জোহর ওয়াক্তে জোহর এবং আছর ওয়াক্তে আছর নামায আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত দরুদ, যিক্র-আযকার, তাকবীর, তালবিয়া ও মাসনূন দু’আসমূহ পাঠ করতে থাকবেন।
মুযদালিফায় রওয়ানা: সূর্যাস্থ যাওয়ার পর মাগরীব নামায আদায় না করে আরাফাতের ময়দান থেকে মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হবেন। মুযদালিফায় তাবু থাকে না, খোলা আকাশের নিচে নিজ দায়িত্বে বিছানা করবেন এবং অজু করে প্রথমে মাগরীবের ফরজ তারপর এশার ফরজ নামায (দুই রাকাত কছর) আদায় করবেন। সম্ভব হলে সঙ্গীদের নিয়ে ফরজ নামায জামাতের সাথে পড়বেন। সাথে সাথে তাকবীরে তাশরীক ও তালবিয়া পাঠ করবেন। (মনে রাখবেন, মুযদালিফা দু‘আ কবূলের স্থান) তারপর মাগরীবের সুন্নাত ও পরে এশার সুন্নাতসহ বিতর নামায আদায় করে নেবেন। রাতে মুযদালিফার ময়দান থেকেই ৪৯টি (বুট বা এর চেয়ে বড়) পাথর খুঁজে নিবেন। ১ পেকেটে ৭টি করে ৭টি পেকেট করবেন অথবা ১টি পুটলীতে ৭টি এবং আরো ২ পুটলীতে ২১টি করে ৪২টি পাথর বাধবেন। ১৩ যিলহজ পর্যন্ত মিনায় অবস্থানের নিয়্যত থাকলে ৭০টি কঙ্কর নিবেন, অর্থাৎ অতিরিক্ত ২১টি, ১৩ যিলহজ যথা নিয়মে শয়তানকে নিক্ষেপ করবেন। মনে রাখবেন, মুযদালিফার ময়দান থেকেই কঙ্কর সংগ্রহ করতে হবে। বার বার তাওবার নামায পড়বেন। আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তা-নির রজীম, দু‘আ-দরূদ, যিকর-আযকারের মাধ্যমে সময় কাটাবেন। মুযদালিফায় পৌঁছে রাতটা কাটাতে পারলেই পরদিন ১০ যিলহজ সকালে আপনার তাবুতে চলে আসবেন।
১০ যিলহজ্বে করণীয়: সকালে সূর্য উঠার সাথে সাথে মিনার পথে রওয়ানা হবেন পথিমধ্যে ওয়াদিয়ে মুহাসসার অতিক্রম করার সময় এই স্থানটি দ্রুত পার হয়ে যেতে হবে কারণ এটি আযাবের স্থান। যত তাড়াতড়ি সম্ভব তা পার হয়ে যাওয়া উচিত। মিনার বাসা থেকে তালবিয়া, দু‘আ-দরুদ পাঠ করতে করতে প্রথমে বড় শয়তানের দিকে যাবেন। বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের পূর্ব মুহুর্তে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করবেন। (মিনার শেষ সীমানায় শয়তানের চিহ্নিত স্তম্ভ) ১০ যিলহজ বড় শয়তানকে ১টি ১টি করে নিম্নের দু‘আ পড়তে পড়তে ৭টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। এক সাথে ২টি বা সবগুলো পাথর একসাথে নিক্ষেপ করবেন না। এ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা অপরিহার্য। “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার রাগামান লিশ্-শায়তান ওয়া রিদ্বান লির রহমান আল্লাহুম্মাজ আলহু হাজ্জাম মাবরুরান ওয়া যামবাম মাগফূরা ওয়া সা‘য়াম মাশকূরা ওয়া তিজা-রাতাল লান তাবূরা। অথবা সংক্ষেপে রিদ্বান লির রহমান ওয়া রজমান লিশ শয়তান বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।” বলে ১টি ১টি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। হে আল্লাহ আমাদেরকে বায়তুল্লাহ শরীফ ও রওজা শরীফের যিয়ারত নসীব করুন। আমীন।
লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), বন্দর, চট্টগ্রাম; খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।