জুম’আর খুতবা

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি | শুক্রবার , ১১ অক্টোবর, ২০২৪ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

অলীর পরিচয়: অলী শব্দ একবচন, বহুবচন আউলিয়া, শব্দটি আরবি এর একাধিক অর্থ রয়েছে, . বন্ধু, . নৈকট্যধন্য, . সাহায্যকারী, . অনুগত ইত্যাদি। তাকওয়ার পূর্ণতা ছাড়া অলী হওয়া যায়না। ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী (রহ.) (ওফাত: ৬০৬ হি.) বলেন, বেলায়ত এক বিশেষ নৈকট্যের নাম। আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে এ নৈকট্য দান করে থাকেন। (বাহারে শরীয়ত, খন্ড: , পৃ: ২৬৪)

আল কুরআনের আলোকে অলীদের মর্যাদা: আল্লাহর প্রিয় বান্দারা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আত্নশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর পথে বিলীন করার মাধমে বেলায়তের স্তরে উন্নীত হয়। সাধারণ মানুষতো জাহান্নামের আগুনের ভয়ে ইবাদত বন্দেগী করে। আল্লাহর ওলীগণ জাহান্নামের ভয়ে বা জান্নাতের আশায় আল্লাহর ইবাদত করে না। তারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ইবাদত করে থাকে। তাঁদের মর্যাদা প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহর অলীদের কোনো ভয় নেই, নেই কোন দু:খ কষ্ট, যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। (আল কুরআন, সূরা: ইউনুস, আয়াত: ৬২,৬৩)

আল্লাহর অলীকে চেনার অন্যতম নিদর্শন হলো তাঁরা শরীয়তের পূর্ণ পাবন্দ হবেন, শরীয়তের বিধিবিধান পূর্ণরূপে মেনে চলেন, খোদাভীতি তাদের চারিত্রিক ভূষণ, তাঁরা অন্যায় অপরাধ পাপাচার মিথ্যাচার ও অনৈতিক কার্যক্রম থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকেন। তাঁদের পরিচয় প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা আরো এরশাদ করেছেন, একমাত্র খোদাভীরু লোকেরাই আল্লাহর অলী। (সূরা: আনফাল, আয়াত: ৬৪)

উপ মহাদেশের প্রখ্যাত তাফসীরকার সদরুল আফাযিল আল্লামা মুফতি নঈম উদ্দিন মুরাদাবাদী (রহ.) প্রণীত তাফসীর “খাযাইনুল ইরফান” সূরা ইউনুস ৬২ নং আয়াতে এ প্রসঙ্গে বর্ণনা করেন ওলী হচ্ছেন, যিনি বিশুদ্ধ আক্বিদা পোষণ করেন, নেক আমল গুলো শরীয়ত সম্মত উপায়ে সম্পন্ন করেন, এমনকি যে কোন ধরনের সন্দেহভাজন বস্তু থেকেও নিজেকে হিফাজত করেন। (খাযাঈনুল ইরফান, সূরা: ইউনুস, আয়াত: ৬২)

আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বলেন, অলীর জন্য প্রয়োজনীয় শরয়ী জ্ঞান থাকা শর্ত। আল্লাহ যাঁকে বেলায়ত দান করতে চান তখন তাঁর নিকট শরয়ী জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। (ফাতোয়াই রযভীয়া, ২০/৫৩০)

মু’জিযা ও কারামাতের বর্ণনা: প্রখ্যাত মুফতি সদরুশ শরীয়্যাহ মুহাম্মদ আমজাদ আলী প্রণীত “বাহারে শরীয়ত” ফিক্‌হ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, আল্লাহর কোনো নবী থেকে নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে যদি স্বভাব বিরুদ্ধ কোনো কাজ প্রকাশ হয় তা হচ্ছে “ইরহাস” নবুওয়ত প্রকাশের পর যদি স্বভাব বিরুদ্ধ কিছু সংঘটিত হয় তা হচ্ছে মু’জিযা। আল্লাহর কোনো অলী থেকে যদি এমন কোনো কাজ প্রকাশ হয় বা সংঘটিত হয় তা হচ্ছে কারামত। নবীগণের মু’জিযা নবুওয়তের সত্যতার দলীল, কারামত কখনো মু’জিযার সমকক্ষ হতে পারেনা। নবুওয়তের সত্যতা প্রমাণের জন্য মু’জিযা প্রকাশ করা জরুরি। কারামত প্রকাশ করা জরুরি নয়। (আর রিসালাতুল কুশাইরিয়া, পৃ: ৩৭৮)

কোনো কামিল ওলী থেকে কারামত প্রকাশ না হলেও তাঁর বেলায়তকে অস্বীকার করা যাবেনা। অনেক কামিল ওলী কারামত প্রকাশে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তা গোপন করেন, কারামত প্রকাশ করেন না। (জামেউ কারামাতিল আউলিয়া, ভূমিকা ১/৩৯)

অলীদের কারামত সত্য, কারামাতের সত্যতা পবিত্র কুরআন দ্বারা প্রমাণিত: হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম হযরত মরিয়ম আলাইহিস সালাম’র নিকট গ্রীষ্মকালের ফল শীতকালে দেখতেন মৌসুম বিহীন ফল লাভ করা এটা তাঁর কারামত ছিল। আল্লাহ তা’আলা এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, যখন যাকারিয়া তাঁর নিকট তাঁর নামায পড়ার স্থলে যেতেন তখন তাঁর পাশে খাদ্য সামগ্রী দেখতে পেতেন, তিনি বললেন হে মরিয়ম। ইহা তোমার কাছে কার পক্ষ থেকে এসেছে? তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে, তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে, নিশ্চয় আল্লাহ যাকে চান সীমাহীন রিযিক দান করেন। (আল কুরআন, সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ৩৭)

তাফসীরে মাজহারী প্রণেতা হযরত সানা উল্লাহ পানিপথী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্ণনা করেন, হযরত মরিয়ম (.) সংক্রান্ত এ ঘটনা ওলীদের কারামত সত্য হওয়ার সমুজ্জ্বল প্রমাণ ও সুস্পষ্ট দলীল। (তাফসীরে মাজহারী, সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ৩৭, ২য় খন্ড, পৃ: ৯৮)

হদীস শরীফের আলোকে আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা: অলীগণ আল্লাহর নৈকট্যধন্য নিয়ামত প্রাপ্ত আল্লাহর অনুগ্রহভাজন বান্দা। তাঁরা আল্লাহর প্রিয়ভাজন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে তাঁদের জীবন উৎসর্গীত। তাঁরা চলনে বলনে চরিত্রে আদর্শে ব্যবহারে আচরণে সততা ও নিষ্ঠায় ন্যায় পরায়ণতা ও সত্যবাদিতায় উদারতা মানবিকতা ও দানশীলতা, খোদা ভীতি ইবাদত বন্দেগী ও ইখলাসপূর্ণ আমলে আখলাকে রাসূলুল্লাহর জীবনাদর্শের বাস্তব নমুনা। দ্বীনের পথে হিদায়তের পথে ইসলামের পথে কুরআনের পথে জান্নাতের পথে শান্তির বানী প্রচারে তাঁরা নিবেদিত প্রাণ মর্দে মু’মিন ইনসানে কামিল। বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রচার প্রসারে তাঁদের ত্যাগ ও কুরবানির ইতিহাস অম্লান হয়ে থাকবে। পৃথিবীর দেশে দেশে ইসলামের আলোকবর্তিকা নিয়ে হেদায়তের বাণী প্রচারে তাঁরা মানবতার ধর্ম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের সুমহান আদর্শ পৃথিবীর দিক দিগন্তে ছড়িয়ে দিয়েছেন। শত বাধা বিপত্তি ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সমকালীন শাসক গোষ্ঠীর ভয়ভীতি ও নানাবিধ চক্রান্ত ষড়যন্ত্র মুকাবিলা, তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদ প্রচারের মিশনকে তাঁরা সফল করেছেন, তাঁরা আমাদের মুক্তির দিশারী, চেতনার বাতিঘর। তাঁদের অনুসৃত শিক্ষা ও দর্শন সংকট মুক্তির পাথেয়। ইসলামে তাঁদের মর্যাদা কুরআন সুন্নাহ কর্তৃক স্বীকৃত। তাঁরা খোদা প্রদত্ত মর্যাদায় সম্মানিত, হিংসা বিদ্বেষ ও জোরপূবর্ক নয় ব্যবহারিক জীবনের আদর্শ দিয়ে তাঁরা সত্যান্বেষী মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকীম তথা সঠিক পথের সন্ধ্যান দিয়েছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সম্মান ও মর্যাদা প্রসঙ্গে অসংখ্য হাদীস বর্ণনা করেছেন এরশাদ হয়েছে, হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তাঁরা নবীও নন শহীদও নন, কিন্তু কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তাঁদের মর্যাদা দেখে নবীগণ ও শহীদগণ ঈর্ষান্বিত হবেন, সাহাবাগণ আরজ করলেন হে আল্লাহর রসূল আমাদেরকে বলুন তাঁরা কারা? নবীজি এরশাদ করলেন, তাঁরা ঔই সকল ব্যক্তি যাঁরা কোন আত্নীয়তার বন্ধন ও লেনদেন ছাড়া শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসেন। আল্লাহর শপথ তাঁদের চেহারা সমুজ্জ্বল হবে এবং নূরের মিম্বরের উপর তাঁরা উপবিষ্ট হবেন। যখন লোকেরা ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকবেন তখন তাঁদের কোন ভয় থাকবেনা। যখন লোকেরা দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়বে তখন কোন দু:খ তাদেরকে স্পর্শ করবেনা, অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতে করীমা তিলাওয়াত করলেন, জেনে নাও, নি:সন্দেহে আল্লাহর ওলীগণের না আছে কোন ভয় না দু:খ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস: ৩৫২৭)

অলীদের প্রতি বিদ্বেষ শোষণকারীদের জন্য আল্লাহর যুদ্ধ ঘোষণা: বন্ধুর বন্ধুকে সম্মান করা বন্ধুকে সম্মানের নামান্তর। বন্ধুর বন্ধুকে কষ্ট দেয়া অসম্মান করা প্রকৃত পক্ষে বন্ধুকে কষ্ট দেওয়ার শামিল। অলীগণ আল্লাহর বন্ধু। তাঁদের প্রতি ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার নামান্তর, তাদেরকে অসম্মান করা আল্লাহকে অসম্মান করার শামিল। অসংখ্য অলীগণ, নিজেদের মাতৃভূমি ত্যাগ করে ইসলামের আদর্শ ও সৌন্দর্যের বাণী নিয়ে শান্তির বার্তা বহন করে এ দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পদার্পন করেছেন, অনেকেই স্থায়ীভাবে এ দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবেসে এ দেশে স্থায়ী ভাবে নিজের ঠিকানা করে নিয়েছেন, পাহাড়ে পর্বতে লোকালয়ে জনপদে নিজেদের খানকাহ মসজিদ মক্তব দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কুরআন ও হাদীসের বানী প্রচার করেছেন, কুফর শির্ক বিদয়াত ও পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ মমত্ববোধ ও সম্প্রীতি শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁদের ব্যবহারিক জীবনের আদর্শ ও চারিত্রিক গুণাবলীতে মুগ্ধ হয়ে অসংখ্য মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে কলেমার পতাকাতলে সমবেত হয়েছেন। আমাদের ঈমান আক্বিদার হিফাজত ও আমলের প্রশিক্ষণে তাঁদের ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরনীয়। তাঁরা প্রভূর সান্নিধ্যে মিলিত হয়েছেন, মাজারে শায়িত আছেন, তাদের সমাধিস্থল ইসলামী স্থাপনা ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে স্বীকৃত। কামিল অলীদের মাজার যিয়ারত ও তাঁদের ফয়েজ ও বরকত লাভের মাধ্যমে মহান আল্লাহর দয়া অনুগ্রহ পাওয়ার অবলম্বন। মু’মিন বান্দারা অলীদের মাযারে সুন্দর ও মনোরম ইসলামী পরিবেশে কুরআন তিলাওয়াত, যিয়ারত কর্মসূচি ও দ্বীনি কার্যক্রম অব্যাহত রাখুক এটাই কাম্য।

মাজার ভাঙ্গা কবরকে অসম্মান করা: মাযারকে পদদলিত করা, মাজার যিয়ারত করাকে মাযার পুজারী আখ্যা দেওয়া নিছক বাড়াবাডি ও সীমালঙ্গন বৈ আর কিছু নয়। যা কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। তবে মাজার কেন্দ্রিক কোনো প্রকার ভন্ডামী, অনৈসলামিক কার্যকলাপ ইসলাম সমর্থন করেনা। মাজারকে কেন্দ্র করে কোন শির্ক বিদআত ও শরীয়ত বিরোধী কার্য কলাপ চলমান থাকলে তা বন্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মাজারে সিজদা করা হারাম। অপ্রয়োজনে আগর বাতি জ্বালানো, নারী পূরুষের অবাধ বিচরণ। মাজার কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক মানসিকতা সম্পন্ন বেনামাযী চরিত্রহীন লোকদের মাজার পরিচালনা কমিটির অন্তর্ভুক্ত করার প্রবণতা বন্ধে নবী প্রেমিক অলী প্রেমিক দ্বীনদার মুত্তাকী মুসল্লী ভাইদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে আল্লাহর অসংখ্য অলীরা শায়িত আছেন। এদেশে ইসলাম প্রচারের ইতিহাসের সাথে তাঁদের জীবন ইতিহাস ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের অবদান ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁদের অবদান ও ভূমিকা অস্বীকার করা তাঁদের প্রতি ঘৃণা অসম্মান ও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা মুসলমানের চরিত্র হতে পারেনা। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেন যে আমার ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। (সহীহ বুখারী, হাদীস: ৬৫০২)। হে আল্লাহ আমাদেরকে আউলিয়ায়ে কেরামের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসাএ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রি),

বন্দর, চট্টগ্রাম; খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক) : আরাধ্য গন্তব্যে
পরবর্তী নিবন্ধআকাশেই পাইলটের মৃত্যু, অতঃপর যা ঘটল