বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্বামী নিহত হয়েছেন অভিযোগ করে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলার তিন মাস পর থানায় হাজির হলেন স্বামী। বললেন, এটি তার জন্য দুর্ভাগ্যজনক। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন তার বাবা ও দুই ভাইকে নিয়ে সোমবার রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হন। তার দাবি, তার অজান্তে স্ত্রী কুলসুম ঢাকার আদালতে তাকে মৃত দেখিয়ে হত্যা মামলাটি করেছিলেন, যা এখন তদন্ত করছে সাভারের আশুলিয়া থানা পুলিশ। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে সুরমা এলাকায় আলোচনা তৈরি হয়। সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আবুল হোসেন বলেন, জীবিত থাকার বিষয়ে আল আমিন থানায় বসে ভিডিওতে সবকিছু বলেছেন। হত্যা মামলাটি আশুলিয়া থানার তদন্তাধীন হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাকিব মঙ্গলবার সকালে এসে তাকে নিয়ে গেছেন।
ওসি বলেন, আল আমিনের পরিবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পিরোজপুর এলাকায় ৪০ বছর ধরে বসবাস করছেন। কাজের সূত্রে থাকতেন মৌলভীবাজারের জুড়িতে। তার শ্বশুরবাড়ি আশুলিয়ায়।
পুলিশ সদস্যরা বলছেন, সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ায় ঘটনা ঘটে। সে সময় ভ্যানে স্তূপ করে রাখা লাশের ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি করে। ভ্যানে রাখা নিহতদের একজনের পরিচয় অজ্ঞাত রয়ে যায়। সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে নিজের স্বামী আল আমিন দাবি করে কুলসুম নামে ওই নারী ২৪ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করার আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে সেটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হলে তদন্তে নামে পুলিশ। তবে কুলসুমের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় অনুসন্ধান শুরু করেন কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কর্মী। এতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে কুলসুমের স্বামী আল আমিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অবস্থান করছে এমন তথ্যে অনুসন্ধানে নেমে তার ভাইয়ের খোঁজ পায় র্যাব। তার সঙ্গে কথা বলে র্যাব সদস্যরা নিশ্চিত হন, মামলায় মৃত দেখানো আল আমিন বেঁচে আছেন। এর মধ্যেই সোমবার রাতে দক্ষিণ সুরমা থানায় হাজির হয় আল আমিন।