জিপিএ-৫ এ রেকর্ড

এসএসসির ফল প্রকাশ, ইংরেজি ও গণিতের কারণে কমেছে পাসের হার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

 

 

এবারের (২০২২ সালের) এসএসসি পরীক্ষায় ৮৭.৫৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে চট্টগ্রামে। আর জিপিএ৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৬৬৪ জন। গতবছর (২০২১ সালে) পাসের হার ছিল ৯১.১২ শতাংশ। আর জিপিএ৫ পায় ১২ হাজার ৭৯১ জন। হিসেবে পাসের হার গতবারের তুলনায় ৩.৫৯ শতাংশ কমেছে এবার। তবে জিপিএ৫ প্রাপ্তির সংখ্যায় এবার রীতিমতো রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম।

কেবল এক বছরের (২০২১ সালের তুলনায়) ব্যবধানেই

জিপিএ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ৫ হাজার ৮৭৩ টি বেড়েছে। এবারের এসএসসিতে ১৮ হাজার ৬৬৪ জনের জিপিএ৫ প্রাপ্তির এই সংখ্যা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগে গতবছরসহ মাত্র দুবার জিপিএ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা দশ হাজারের কোটা অতিক্রম করে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে গতবছর ১২ হাজার ৭৯১ জন এবং ২০১৪ সালে ১০ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ৫ পায়। আর সবচেয়ে বেশি পাসের হারও ছিল ২০১৪ সালে। ওই বছর (২০১৪ সালে) এসএসসিতে ৯১.৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। যা চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

গতবছরের তুলনায় পাসের হার কমার কারণ হিসেবে যথারীতি পার্বত্য জেলাসহ পিছিয়ে থাকা অঞ্চলের দুর্বলতাকে উল্লেখ করেছেন শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা।

বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে গতবছর সবকয়টি বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়নি। মাত্র তিনটি করে বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। বাকি বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিং ও জেএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। তবে তিনটি ছাড়া এবার সবকয়টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এর মাঝে বিশেষ করে ইংরেজি ২য় পত্র বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী কৃতকার্য হতে পারেনি। যা ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দাবিতিন পার্বত্য জেলাসহ পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোতে ইংরেজি বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব রয়েছে। এসব অঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠানে অন্য বিষয়ের শিক্ষক দিয়ে ইংরেজি পড়ানো হয়। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা ভালো করতে পারছেনা।

শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ীএবারের পরীক্ষায় মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩ জন। পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করতে পারেনি ১৮ হাজার ৫২১ জন। অকৃতকার্যদের মাঝে এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজার ১৯৪ জন।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিষয় ভিত্তিক ফলাফলে ইংরেজি বিষয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এরপরই পিছিয়ে গণিত বিষয়ে। ইংরেজি ১ম পত্রে ৯৩.৭২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করলেও ২য় পত্রে পাস করতে পেরেছে ৯২.৩৬ শতাংশ। আর গণিতে পাসের হার ৯৫.৯৬ শতাংশ।

এর বাইরে মানবিকের অর্থনীতি বিষয়ে ৯৬.১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এছাড়া বাকি সব বিষয়ে পাসের হার ৯৮ শতাংশের ঊর্ধ্বে।

প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলের বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার বলছেন, এবার পাসের হার কিছুটা কমলেও জিপিএ৫ কিন্তু অনেক বেড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী মাত্র একটি বিষয়ে খারাপ করেছে। সেটি না হলে ফল আরো ভালো হতে পারতো।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জিপিএ৫ পাওয়া মোট ১৮ হাজার ৬৬৪ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ হাজার ৮৮৯ জন ছাত্রী এবং ৭ হাজার ৭৭৫ জন ছাত্র। বিজ্ঞান বিভাগে এবার পাসের হার ৯৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৫২৫ জন। আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ, মানবিক বিভাগে পাস করেছে ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষায় জিপিএ৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৬৬৩ জন আর মানবিকে ৪৭৬ জন জিপিএ৫ পেয়েছে।

এবার চট্টগ্রাম মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোতে পাসের হার ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ, উপজেলায় এ হার ৮৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। কঙবাজার জেলায় এবার পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটিতে ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ। খাগড়াছড়ি জেলায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং বান্দরবান জেলায় ৭৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেয়রসহ কাউন্সিলররা আগ্রহী, আপত্তি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ‘সৈকত বাহাদুরের’ মৃত্যু