জিনের আছর থেকে রক্ষার নামে নগরের এক গৃহিণীর কাছ থেকে নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন আত্মসাৎ করেছে প্রতারক চক্র। প্রতারণার শিকার হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে থানায় অভিযোগ দেন তিনি। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে দুই প্রতারককে। গত শনিবার নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর ট্যানারি বটতল মনছুর আলী কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি গতকাল গণমাধ্যমকে জানায় পুলিশ। ধৃত দুই প্রতারক হচ্ছেন মো. লালন সরদার (৪০) ও মো. সাদ্দাম (৩৭)। পুলিশ তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা ২৭ হাজার ৪০০ টাকা এবং প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন তাবিজ, পাথর, ঝিনুক, মাছের কাঁটা, গাছগাছালির টুকরা জব্দ করেছে।
সিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে মনছুর আলী কলোনিতে ওই গৃহিণী নিজ বাসায় মুরগি কাটার সময় অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তি এসে মাজারের জন্য চাল চায়। গৃহিণী তাদের চাল এনে দিলে তারা কিছু চাল নিয়ে বাকি চালগুলো ফেরত দেয়। ওই দুজন ব্যক্তি কিছুক্ষণ পর গৃহিণীকে বলে, তার ওপর জিনের আছর আছে।
এরপর তারা গৃহিণীর ঘরে প্রবেশ করে তার কাছে প্রথমে পান–সুপারি চাইলে তিনি তাদের পান–সুপারি দেন। পরে পানি চাইলে পানি দেন। তারপর তারা গৃহিণীকে ওখান থেকে পানি পান করান।
পুলিশ জানায়, দুজনের একজন প্যান্টের পকেট থেকে গৃহিণীর হাতে একটি তাবিজ দিয়ে বলে স্টিলের বাটিতে করে কিছু চাল নিয়ে আসার জন্য। গৃহিণী তাদের কথা মেনে চাল নিয়ে আসলে স্টিলের বাটির ভিতর চালের উপর পানি ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে তারা তার কাছে ১০০ টাকা চাইলে তিনি তাদের কথামতো টাকা দেন। এরপর তারা গৃহিণীকে ১০০ টাকা ফেরত দেয়। তারপর তারা পুনরায় তার কাছে ২০০ টাকা চাইলে একইভাবে তারা নেয় ও ফেরত দেয়। একইভাবে ১১ হাজার টাকা চায়, নেয় ও ফেরত দেয়। এরপর তারা ঘরে আর টাকা আছে কিনা জানতে চায়। ওই প্রতারকরা তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখালে গৃহিণী ঘরে থাকা ৩৩ হাজার টাকা তাদের দেন। তখন ওই দুজন কৌশলে একটি কাগজে মুড়িয়ে একটি উড়না দিয়ে কয়েকটি গিঁট দিয়ে তা গৃহিণীকে রাখতে বলে। এরপর তারা খাটের উপর থাকা একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কৌশলে নিয়ে নেয়। টাকার প্যাকেটটি তারা কৌশলে নেয় ও গৃহিণীকে তিন দিন পরে গিঁট দেওয়া টাকার প্যাকেটটি খোলার জন্য বলে তারা বেরিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, প্রতারকরা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর গৃহিণী বুঝতে পারেন ওই দুজন ব্যক্তি তাকে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা ও মোবাইল নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা দায়ের করলে অঙিজেন এলাকা থেকে লালন ও সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করা হয়।