করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় থাকলেও সেই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার গতি ধীর হবে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ। মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে বলা হয়েছে, চলতি ২০২০ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে। আর আগামী বছর প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
গত জুনে আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টেও ২০২০ সালে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন দেখানো হয়েছিল। তবে ২০২১ সালের প্রাক্কলনে সেখানে ৫.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস ছিল, এবার তা কমিয়ে আনা হয়েছে ১.২ শতাংশ পয়েন্ট।
আইএমএফ বলছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আবার ৭ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বাংলাদেশের ২০১৭ সালের অর্জিত প্রবৃদ্ধির সমান। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্যও ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিল। কিন্তু মহামারীর মধ্যে দুই মাসের লকডাউন আর বিশ্ব বাজারের স্থবিরতায় তা বড় ধাক্কা খায়।
গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সরকারি হিসেবে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশে নেমে আসে, যদিও এই অংক আরও কম হওয়ার কথা বলে অনেক বিশ্লেষকের ধারণা। গত সপ্তাহে বিশ্ব ব্যাংক যে দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন এসেছে আইএমএফের চেয়ে অনেক কম। বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, মহামারীর ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে। স্বল্পমেয়াদের জন্য হলেও দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে যেতে পারে, যাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মীরা।
অবশ্য বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস প্রত্যাখ্যান করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ওই প্রাক্কলন বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে আইএমএফ বলেছে, চলতি বছর বিশ্বের গড় জিডিপি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে। উন্নত বিশ্বের সবগুলো দেশ এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের অধিকাংশ দেশের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যাবে।