জাহাজ ভাঙা শিল্পে পিএইচপির নতুন মাইলফলক

হংকং কনভেনশন বাস্তবায়নে ৫ বছর পূর্তি উদযাপন

| শুক্রবার , ৪ জুলাই, ২০২৫ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব শিপইয়ার্ড। হংকং কনভেনশন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রথম সুরক্ষামূলক শিপইয়ার্ড এটি। এ ছাড়া ২০২০ সালে জাপানের আন্তর্জাতিক ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি ক্লাসএনকে’র মাধ্যমে হংকং কনভেনশনেরও সনদ অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে টানা পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দুর্ঘটনামুক্তভাবে জাহাজ পুনর্ব্যবহার করে আসছে। যা দেশের শিপ রিসাইক্লিং খাতের জন্য এক যুগান্তকারী অগ্রগতি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ক্লাসএনকে’র মাধ্যমে সনদ অর্জনের পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করেছেন পিএইচপি ফ্যামিলি। ভাটিয়ারিতে পিএইচপির নিজস্ব শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন জাপানের শীর্ষ মেরিটাইম ও বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্লাসএনকে’র এঙিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইয়ামাগুচি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের মিনিস্টার ও ডেপুটি চিফ অব মিশন তাকাহাশি নাওকি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, জাপান ও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিপিং ও ট্রেডিং কোম্পানির মধ্যে এমওএল, এনওয়াইকে লাইন, কে লাইন, মিটসুই অ্যান্ড করপোরেশন ও জেএফই সোজি করপোরেশনের সিনিয়র কর্মকর্তারা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বাণিজ্যিক সফলতার পাশাপাশি আমরা বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়ন ও মানবিক দায়িত্ব একসাথে এগিয়ে নিতে হয়। পাঁচ বছরের এই পথচলা আমাদের সেই দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। এই মাইলফলক পরিবেশগত তত্ত্বাবধান, আন্তর্জাতিক সম্মতি এবং শ্রমের মর্যাদার প্রতি আমাদের অটল প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী উদাহরণ স্থাপন করতে পেরে গর্বিত।

স্বাগত বক্তব্যে পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, গত এক দশকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিবেশ সম্মতির জন্য আমরা ১৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছি। বিশ্বখ্যাত এমওএল ও এনওয়াইকে’র জাহাজগুলো একটি দুর্ঘটনা ছাড়াই আমরা সফলভাবে রিসাইকেল করেছি।

মতবিনিময় শেষে শ্রমিকদের নিয়ে ক্লাসএনকে’র মাধ্যমে হংকং কনভেনশনের সনদ অর্জনের পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করেন অতিথিরা। পরে পিএইচপির শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করেন তারা।

পরিদর্শন শেষে ড. ইয়ামাগুচি বলেন, বর্তমানে জাহাজ ভাঙা ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। বিশেষ করে হংকং কনভেনশনের মতো আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ খাতটি একটি টেকসই শিল্পে রূপান্তরিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এই খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্বে নিয়ে যেতে পারে। পিএচইপি শিপইয়ার্ডটি সবুজ পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতা ও কার্যক্রমের টেকসই ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের মিনিস্টার তাকাহাশি নাওকি।

এ সময় হংকং কনভেনশন বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারা হংকং কনভেনশন মানে পৌঁছাতে পারেনি, তাদের আর্থিক সহায়তা দরকার। আমরা সরকার, শিল্প মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছি, যেন এসব ইয়ার্ডকে দীর্ঘমেয়াদি লোন দিয়ে পুনর্গঠন সম্ভব হয়। বিদেশি ডোনার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এতে সহযোগিতা করলে এই খাত আরও শক্তিশালী হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ কর্মসূচি
পরবর্তী নিবন্ধজয়দেব করের দুটি কবিতা