চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যেসব ভয়ংকর প্রকৃতির অপরাধী জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হচ্ছে তাদের বিষয়ে তদারকি, নজরদারি ও তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলার জন্য গঠন করা হচ্ছে ‘বিশেষ মনিটরিং সেল’। মনিটরিং সেলের প্রধান অফিস হবে রাজধানী ঢাকায়।
দেশের ৬৪ জেলায় হবে শাখা অফিস। বিশেষ মনিটরিং সেলের প্রধান হবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব। ডিআইজি পদমর্যাদার থাকবেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের এই উদ্যোগ সফল করার জন্য সব ধরনের সহায়তা করবে আইন মন্ত্রণালয়। খুব শীঘ্রই বিশেষ মনিটরিং সেলের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ–কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গত এক বছরে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে গেছে শতাধিক ভয়ংকর অপরাধী। জামিন নিয়ে বের হয়ে যাওয়া এই ধরনের অপরাধী কারা কখন কিভাবে বের হয়ে কোথায় আছে তার কোন তথ্য পায় না পুলিশ। যেসব ভয়ংকর ধরনের অপরাধী জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে আছে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত, মাদক কারবারি, চোরাকারবারি ধরনের দুর্ধর্ষ অপরাধী। এই জন্য উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থাগুলো।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুর্ধর্ষ অপরাধীরা কে কখন কিভাবে জামিনে মুক্ত হয়ে কোথায় অবস্থান করছে সেই তথ্য পাচ্ছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। অপরাধীরা কিভাবে জামিন পাচ্ছে সেটাও জানে না তারা। ফলে কে কখন জামিন নিয়ে আত্মগোপন করছে বা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, তা সংস্থাগুলোর নজরের বাইরেই থাকছে। এতে গুরুতর ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়া আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এই ধরনের আশঙ্কা থেকে গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিশেষ মনিটরিং সেল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠনের বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দুর্ধর্ষ অপরাধীরা জামিন পাচ্ছে কি না তা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিংয়ে সরকারি আইনজীবীদের আরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়কে যথাযথ পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ করা হয়। ওই সব বৈঠকে বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত আসামি, দুর্ধর্ষ জঙ্গি ও তালিকাভুক্ত অপরাধীদের মধ্যে কতজন জামিনে রয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সেই হিসাব নেই। এমনকি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কতজন নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছে আর কতজন গা ঢাকা দিয়েছে তাও কেন্দ্রীয়ভাবে আইনশৃক্সখলা সংস্থাগুলো জানতে পারছে না। প্রতিদিন দেশের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জেলাগুলোর জজ আদালত থেকে কে কখন জামিন পাচ্ছে, সে হিসাবও নিয়মিত রাখা হচ্ছে না। কারা জামিন পাচ্ছে বা কারা কারাগার থেকে বের হয়ে যাচ্ছে সেই হিসাব থাকা খুবই জরুরি। সমন্বয় ও নজরদারি না থাকায় একাধিক মামলার আসামি একটি মামলাতেই জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়। তবে এ সংখ্যা আগের চেয়ে কমে এসেছে।
মনিটরিং সেলটির কার্যক্রম শুরু হলে অপরাধীরা জামিন পাওয়ার পর পরই তথ্য চলে আসবে। কোন কোন পথ অনুসরণ করে তারা জামিন পেয়েছে সেই তথ্যও আসবে সেলে। তাছাড়া কারাগার থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে আগাম তথ্য মনিটরিং সেলের কাছে চলে আসবে।