বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহিকে ছয় বছরের জন্য কারাগারে পাঠাল ইরানের আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মদদ দিচ্ছেন। ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের প্রতিবাদ করায় গত ১১ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেড় সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আদালত জাফর পানাহিকে প্রায় এক যুগ আগে দেওয়া ৬ বছরের কারাদণ্ডের সাজা কার্যকরের আদেশ দেয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স। খবর বিডিনিউজের।
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র মাসুদ সেতায়েশি জানান, পুরনো সাজা কার্যকরের জন্য তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, তেহরানের এক আদালতে এ আদেশ দেওয়ার পর ‘ট্যাক্সি’ নির্মাতাকে এভিন কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
২০১০ সালে ‘সরকারবিরোধী বিক্ষোভের’ অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পানাহিকে ৬ বছরের সাজা দিয়েছিল আদালত। দুই মাস কারাভোগের পর শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান তিনি। তখন বলা হয়েছিল, যে কোনো সময় তার মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হতে পারে।
গত জুলাইয়ের শুরুতে ইরানের দুই চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা আল-আহমেদ ও মোহাম্মদ রাসুলফকে গ্রেপ্তার করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। রাসুলফের মামলার বিষয়ে প্রসিকিউটরের অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পানাহিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জাফর পানাহিকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলে অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী তাহেরা সাঈদি। তিনি বলেন, নাগরিক হিসেবে জাফরের কিছু অধিকার রয়েছে। কাউকে বন্দি করতে হলে আগে তাকে তলব করতে হয়। কারাবাগের বাইরে কেউ প্রতিবাদ করছেন এমন কাউকে আটক করা হলে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। এটা এক ধরনের অপহরণ।
সিনেমা বানিয়ে নানা আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও খ্যাতি কুড়ালেও জাফর পানাহি নিজ দেশে অনেকটা বন্দি জীবনই কাটাচ্ছিলেন। ইরানের কট্টর ইসলামী সরকারের সমালোচক পানাহির সিনেমা নির্মাণ ও চিত্রনাট্য লেখায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তার দেশত্যাগেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
‘দ্য সার্কেল’ ‘অফসাইড’, ‘ট্যাক্সি’ নির্মাণ করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন পানাহি। তাকে ইরানের জীবিত চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০০০ সালে ‘দ্য সার্কেল’ এর জন্য গোল্ডেন লায়ন, ‘ক্রিমসন গোল্ড’ সিনেমার জন্য ২০০৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সেত্রাঁ রিগা’ বিভাগে পুরস্কার পান তিনি।
