জাপান সফরে সম্পর্ক গভীর ও শক্তিশালী হয়েছে : প্রেস সচিব

মহেশখালী ও মাতারবাড়ী মাস্টার প্ল্যানে সহযোগিতার আশ্বাস

| সোমবার , ২ জুন, ২০২৫ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফর ‘খুবই সফল’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের যে সম্পর্ক, সেটি এই সফরের পর নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী হল।’ গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এসে সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলছিলেন শফিকুল আলম। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।

জাপানের সঙ্গে ছয়টি এমওইউ সই হওয়ার তথ্য দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এর মধ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার জন্য উন্নয়ন নীতি ঋণ হিসেবে ৪১৮ মিলিয়ন ডলার, জয়দেবপুরঈশ্বরদীকে ডুয়েল গেজ ডাবল রেলপথে উন্নয়নে ৬৪১ মিলিয়ন ডলার এবং বৃত্তির জন্য অনুদান হিসেবে আরও ৪.২ মিলিয়ন ডলার দেবে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা যেসব আশ্বাস চাচ্ছিলাম, তার প্রত্যেকটাই। তারা বলেছে, এই অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে থাকবে এবং মহেশখালী ও মাতারবাড়ী ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নিয়ে মাস্টার প্ল্যানে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। জাপান থেকে একটা সাপোর্ট আমরা পাব।

প্রধান উপদেষ্টা গত ২৭ মে রাতে জাপান সফরে যান। দেশটিতে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে যোগ দেন তিনি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠকও করেন। শফিকুল আলম বলেন, এ সফরের অন্যতম লক্ষ্য জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন, বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়া ওনার স্বপ্ন, সে জন্য আমাদের প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। জাপানিরা পুরো বিশ্বে এখন বিনিয়োগ করছে, তারা ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নতুন নীতি নিয়েছে। আগে তাদের বিনিয়োগ চীনমুখী ছিল, এখন তারা বাইরে গিয়েও অনেক বিনিয়োগ করছে। মুহাম্মদ ইউনূস জাপানি প্রধান বিনিয়োগ এজেন্সির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বড় কিছু কোম্পানির সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছেন। বিনিয়োগকারীদের এক ইভেন্টে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৈঠকে ‘ভালো ইতিবাচক সাড়া’ পাওয়ার কথা তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর সে দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসেছেন। এখন জাপান সফরের পর দেশটির অনেক বড় বিনিয়োগকারী আসবে এবং তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে।’

জনশক্তির বাজারে নতুন দুয়ার খুলছে’ : প্রধান উপদেষ্টার সফরের মধ্য দিয়ে জাপানের জনশক্তির বাজারে বাংলাদেশের জন্য ‘নতুন দুয়ার খুলছে’ বলে মন্তব্য করেছেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে কিছু অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে। আমরা আশা করছি এবং জাপানি কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এ দেশ থেকে এক লাখ লোক নেবে। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। একটা সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হলে ১ লাখের বেশি লোকও পাঠানো যাবে। দেশটিতে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৪০ হাজারের মত বাংলাদেশি রয়েছে। এই সরকারের সময় রেকর্ড সংখ্যক ৩ হাজার শিক্ষার্থী গেছে জাপানে। আরও অধিক সংখ্যক সামনে যাবে বলে আমরা আশা করছি। আগামীতে জাপান বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তি ডেস্টিনেশন হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ভাষার ক্ষেত্রে জাপান ছাড় দিচ্ছে। আমরা আশা করছি, সামনে আরও আলোচনা হবে। যত দ্রুত ও যত বেশি জনশক্তি পাঠানো যায়, সেই চেষ্টা করছেন প্রধান উপদেষ্টা।

নির্বাচন ৩০ জুনের পরে যাবে না’ : ব্রিফিংয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এটা (নির্বাচন) আগেও হতে পারে, ৩০ জুন মানে এর বেশি যাবে না। এর মধ্যে এটা ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারিতে হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে, মার্চেও হতে পারে, এপ্রিলে হতে পারে, মে মাসেও হতে পারে, জুনেও হতে পারে। কিন্তু ৩০ জুনের পরে যাবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় ৪ দিন ধরে ৯০ হাজার গ্রাহক অন্ধকারে
পরবর্তী নিবন্ধঅতি ভারি বৃষ্টি, নগরীর নিচু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা