জানুয়ারি মাসেই রেকর্র্ড পণ্য হ্যান্ডলিং

চট্টগ্রাম বন্দরে ইকুইপমেন্ট বহর সমৃদ্ধ হওয়ায় এ সাফল্য এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বছরজুড়ে অ্যাকশন  প্ল্যান তৈরিতে গুরুত্বারোপ নৌ উপদেষ্টার সাথে বন্দর চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক আজ

হাসান আকবর | বৃহস্পতিবার , ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

আধুনিকায়ন এবং ইকুইপমেন্ট বহর সমৃদ্ধ হওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম মাস থেকেই পণ্য হ্যান্ডলিং প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। তবে একইসাথে এই গতিশীলতা ধরে রাখতে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নেয়ার উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহুমুখী উন্নয়ন নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করতে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা আজ সকালে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে আসছেন। তিনি বন্দরের চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠকে মিলিত হবেন বলেও সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে। বাড়ছে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের পরিমানও। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের বাড়তি চাপ সামাল দিতে হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকেই। বছরের প্রথম মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। নানা ধরনের সংকট এবং সীমাবদ্ধতার মাঝে থেকেও চট্টগ্রাম বন্দর গত বছর থ্রি মিলিয়ন ক্লাবে অবস্থান নিশ্চিত করে। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর রেকর্ড সৃষ্টি করে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করে। এর আগে বন্দরের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০২১ সালে। ওই বছর চট্টগ্রাম বন্দরে ৩২ দশমিক ১৫ লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করেছিল।

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম চলতি বছর অতীতের রেকর্ড ভেঙে ফেলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সূত্র জানিয়েছে, রেকর্ড সৃষ্টিকারী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের সর্বমোট কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ৭০৯ টিইইউএস। এর মধ্যে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫ টিইইউএস, খালি কন্টেনার বিদেশে পাঠানো হয়েছিল ৭ হাজার ৮৪১ টিইইউএস। রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেনার ছিল ৬৩ হাজার ৬৩৪ টিইইউস এবং খালি কন্টেনার ছিল ৪৯ হাজার ১৩৯ টিইইউস। রেকর্ড সৃষ্টিকারী ওই বছরের প্রথম মাসের রেকর্ড ভেঙে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মোট কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৬১৪ টিইইউএস। এরমধ্যে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৯ টিইইউএস। খালি কন্টেনার ছিল ১১ হাজার ১৯২ টিইইউএস। রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেনার ৭৫ হাজার ২৩৪ টিইইউএস এবং খালি কন্টেনার ছিল ৫৩ হাজার ১৪৯ টিইইউএস। এক বছরের ব্যবধানে একমাসেই কন্টেনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৩০ হাজার ৯০৫ টিইইউএস কন্টেনার। বছরের শুরুতে মাত্র একমাসের এত বড় ব্যবধানকে একটি বিশাল ব্যাপার বলে মন্তব্য করে সূত্র বলেছে, এই বাড়তি কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অর্জন করেছে।

এই সক্ষমতার পেছনে চট্টগ্রাম বন্দরের ইকুইপমেন্ট বহর সমৃদ্ধকরণ, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল অপারেশনে আসা, পানগাঁও টার্মিনালকে অধিকতর কার্যকর করার উদ্যোগসহ নানামুখী পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের এই ধারা ধরে রাখার জন্য বছরজুড়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির উপর ব্যবহারকারীরা গুরুত্বারোপ করেছেন। বন্দরের সার্বিক উৎপাদশীলতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন আজ সকালে চট্টগ্রাম আসছেন। তিনি বন্দরের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথেও মতবিনিময় করবেন। তিনি বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামানসহ বন্দরের বোর্ড সদস্য এবং বিভাগীয় প্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথেও বৈঠক করবেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় আজ বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস
পরবর্তী নিবন্ধপ্রশাসন ও বিচার বিভাগের সংস্কার প্রতিটি নাগরিককে স্পর্শ করবে : প্রধান উপদেষ্টা