বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সবাই সমান সুযোগ সুবিধা পান না। বিশেষ করে জাতীয় দলের বাইরে যারা আছেন তাদের বেলায় এ কথা বেশি করে সত্য। জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের জন্য সুযোগ-সুবিধার স্বল্পতার কথা স্বীকার করেছে বিসিবিও। বিসিবির সভায় ছায়া জাতীয় দল গঠনের কথা উঠেছে। সেক্ষেত্রে বারবার ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করছে বিসিবিই। ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ নাম পাওয়া এই ছায়া জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়েছেন বিসিবি পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ। তিনি বলেন, তারা অবকাঠামোর কিছু উন্নতি করেছেন। পাশাপাশি আরও উন্নতির অবকাশ তিনি দেখছেন। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মঙ্গলবার বোর্ড সভা শেষে জানান ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ গঠনের কথা। মূলত জাতীয় দলের বাইরের ১৬ থেকে ২০ জন বা প্রয়োজনে আরও বেশি ক্রিকেটার নিয়ে গড়া হবে এই স্কোয়াড, যাদের বছরজুড়ে অনুশীলন করানো হবে এবং জাতীয় দলের জন্য তৈরি রাখা হবে। এটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কাজী ইনাম ও আরেক বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদকে। এই দল গঠনের পেছনে জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের অপ্রতুল অনুশীলন সুযোগ-সুবিধার কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। বুধবার এই ছায়া জাতীয় দল নিয়ে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে কাজী ইনামের কণ্ঠেও উঠে আসে একই কথা। ‘অনেক সময় আমাদের ফ্যাসিলিটিজের স্বল্পতা আছে, আমাদের তা ভালো করেই জানা। কোনো ক্রিকেটার যদি জাতীয় দলের বাইরে থাকে, অনেক সময় ফ্যাসিলিটিজ ব্যবহার করতে পারে না। যেমন উদাহরণ ইমরুল কায়েস। অনেক সময় জাতীয় দলে খেলেছে, অনেক সময় বাইরে গেছে। যখন বাইরে যায়, তখন তারা এমন একটি প্রোগ্রামে যেন থাকে, জাতীয় দলের মতোই যেন ফ্যাসিলিটিজ পায়। ঢাকার বাইরেও আমাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে, সিলেটে আছে, কক্সবাজারে আছে। সেই ফ্যাসিলিটিজ যেন ব্যবহার করা যায়।’
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ইনডোরে ও একাডেমি মাঠে গাদাগাদি করে অনুশীলন করতে হয় দলগুলিকে। ঢাকা লিগ ও বিপিএলের সময় একসঙ্গে চার দলের অনুশীলনও হয়ে থাকে। ক্রিকেট মৌসুমে জাতীয় দল, এইচপি স্কোয়াড, অনূর্ধ্ব-১৯ দল, মেয়েদর দলকে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করতে হয় মিরপুরের জিমনেসিয়াম। ভালো মানের জিমনেসিয়াম গোটা দেশে বিসিবির এই একটিই। ঢাকার বাইরে কয়েকটি জায়গায় ইনডোর থাকলেও মান খুব ভালো নয়। অন্যান্য অনেক মৌলিক সুবিধাও নেই ঢাকার বাইরে বেশির ভাগ ভেন্যুতে।
লম্বা সময় ধরে বিসিবির দায়িত্বে থাকার পরও সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামোর খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এ ব্যাপারে কাজী ইনাম বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে সিলেটে, কক্সবাজারে অনেক কাজ করা হয়েছে। অবকাঠামো ও ফ্যাসিলিটিজ একটা ধারাবাহিক কাজ। কিছু উন্নতি আমাদের হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এটা চালিয়ে যেতে হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
ছায়া জাতীয় দল নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক তথ্য জানান কাজী ইনাম, এই দল গঠনে বড় ভূমিকা থাকবে জাতীয় অধিনায়কদের। ‘আমাদের ইচ্ছা আছে তিন সংস্করণের তিন অধিনায়ককে এখানে সম্পৃক্ত করা। গতকাল ও আজকে তামিম, মোমিনুল, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা হয়েছে।
তারা সব জানে। এই ব্যাপারটি নিয়ে যখন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তারা ছিল। তারা সবাই খুব রোমাঞ্চিত ও তাদের খুব ভালো কিছু পরামর্শও আছে। তারা সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারে। যেমন, সাদা বলের ক্রিকেটে ছয়-সাত নম্বরে হিটার পাচ্ছি না আমরা। তখন আমরা এখানে বছরজুড়ে প্রোগ্রাম ও পরিকল্পনা করতে পারি বের করে আনতে।’ কাজী ইনাম জানান, চলতি ঢাকা লিগ শেষ হলেই বাংলাদেশ টাইগার্স দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।