গতকাল ঘোষনা করা হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য বাংলাদেশ দলের নাম। সে দলে জায়গা হয়নি লিটন দাশের। মুলত অফ ফর্মের কারণে দলে জায়গা পাননি তিনি। তবে দল থেকে বাদ পড়ার দিনেই দেখালেন নিজের ঝলক। দুপুরে জাতীয় দল ঘোষণার পর রাতেই ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন লিটন। ওয়ানডে দলে জায়গা হারানোর দিনে বিপিএলে উপহার দিলেন তিনি রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। চ্যাম্পিয়ন ট্রফির অভিযানে থাকছেন যিনি, সে তানজিদ হাসান খুব পিছিয়ে থাকলেন না এখানেও। দুর্দান্ত শতরান এলো তার ব্যাট থেকেও। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ইনিংস শুরু করতে নেমে গোটা ২০ ওভার খেলেন লিটন। তানজিদ আউট হন শেষ ওভারে। ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ওপেনারের সেঞ্চুরিতে রেকর্ডের প্লাবন বয়ে গেল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ২০ ওভারে ১ উইকেটে ২৫৪ রান সংগ্রহ করে ঢাকা ক্যাপিটালস। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে যা সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ ২৩৯ ছিল যৌথভাবে দুটি দলের। ৫৫ বলে ১২৫ রান করে অপরাজিত থেকে যান লিটন। টি–টোয়েন্টিতে তার প্রথম সেঞ্চুরি এটি। ১০ চার ও ৯ ছক্কার ইনিংসে শতরান স্পর্শ করেন তিনি ৪৪ বলে। বিপিএলে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ৪০ বলে। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদের। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিপিএলে আগের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন তামিম ইকবাল। ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেণ তিনি। ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ৬৪ বলে ১০৮ করে আউট হন তানজিদ। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে তোলেন ২৪১ রান। বিপিএলে যে কোনো উইকেটে সেরা জুটির রেকর্ড এটি। উদ্বোধনী জুটিতে দুইশ রান এই প্রথম দেখল বিপিএল। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটেই শুরুর জুটিতে এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর কেবল একটি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার ব্যাটিংয়ে এমন ধ্বংসলীলার আভাস ছিল না শুরুতে। প্রথম চার ওভারে রান ছিল ২২। এর মধ্যেই সানজামুল ইসলামের বলে জীবন পান লিটন। ৫ রানে তার ক্যাচ ছাড়েন কিপার আকবর আলি। পঞ্চম ওভারে সেই সানজামুলকে দুটি চার দুটি ছক্কা মেরে তাণ্ডবের শুরু করেন তানজিদ। পরের ওভারে এসমে মেহরবকে দুটি চার ও এক ছক্কায় হাত সাফাই করে নেন লিটন। এরপর ছুটতে থাকে দুজনের রানের রথ। ৯ ওভারে শতরান পেরিয়ে যায় দল। এরপর আরও তীব্রতায় ছুটে ঢাকা দুইশ রানে পৌঁছে যায় সপ্তদশ ওভারে। বিপিএলে উদ্বোধনী জুটিতে আগের সর্বোচ্চ ছিল সেই ২০১৩ আসরে শাহরিয়ার নাফীস ও লু ভিনসেন্টের ১৯৭। শফিউলের বলে সোজা ব্যাটে চার মেরে শতরানে পা রাখেন লিটন। তার উদযাপনে খুব উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। ১০৪ রানে আরেক দফায় জীবন পান লিটন, এবার ক্যাচ ছাড়েন সানজামুল। শেষ ওভারে শফিউলকে চার মেরে শতরানে পৌঁছে যান তানজিদ। পরের বলে একটি ছক্কা মেরে আউট হয়ে যান তিনি ওভারের তৃতীয় বলে। শেষ বলে ছক্কায় ইনিংস শেষ করেন লিটন। বিপিএলে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের একই ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি এটিই প্রথম।