‘জগৎজুড়িয়া এক জাতি আছে, সে জাতির নাম মানুষ জাতি’ কবির এই কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করলে কোনো মানুষের পক্ষে সামপ্রদায়িক হওয়া সম্ভব নয়। সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি মানুষকে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়। দৃষ্টিভঙ্গি উদার করে। মানুষকে ঐক্যে বিশ্বাস করতে শেখায়। নিজের ধর্মের প্রতি যেমন বিশ্বাস জোরালো করে তেমনি অন্যের ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকরা যাবে না– এই বোধও তৈরি করে দেয়। সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির কারণেই বহু সমপ্রদায় থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন জাতি শাক্তিশালী জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বিশ্বের প্রধান ধর্মসমূহের প্রতিটির মৌলিক দর্শন এক ও অভিন্ন। আর তা হলো অহিংসা, ভালোবাসা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধারণা। মানবজাতি এখানে মূল উপজীব্য। মানব প্রেম ও মানব কল্যাণসাধন সকল ধর্মের মূল–শিক্ষা।
আমাদের সমাজে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সমপ্রীতিকে রক্ষা করতে হবে। জাতিগত, বর্ণগত, ধর্মগত বিভেদকে তুচ্ছ করে সকলের মধ্যে সমপ্রীতির বন্ধনকে জোরালো করতে হবে। সকলের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতার হাত বাড়াতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে পরস্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস। রাষ্ট্র ও সমাজ কর্তৃক সকলের জন্য সমান সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এমন পরিবেশসৃষ্টি করতে হবে যেন সংখ্যালঘুরা নিরাপদভাবে, দ্বিধাহীনভাবে সবকিছুতে অংশ নিতে পারে। সকলের ভেতর অসামপ্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে। সরকার, রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সংখ্যালঘুদের অনুকূল হতে হবে। ধর্মান্ধতা ত্যাগ করে মানুষের প্রতি, অন্য ধর্মের প্রতি, সমপ্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আর তা হলেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।