তৃতীয় লিঙ্গের মনিষা। হিজড়া হওয়ায় কেউ তাকে বাসা ভাড়াও দিত না। জীবন কেটেছে পথে পথে। মানুষের কাছে হাত পেতে চলতো জীবিকা। নিগৃহীত ও বঞ্চনার শিকার মনিষার পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দিয়েছেন মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠাঁই। ঘর পেয়ে আপ্লুত মনিষা।
গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কক্সবাজারকে গৃহ ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ঈদগাঁওয়ের দুই উপকারভোগীর সাথে কথা বলেন। জমিসহ ঘর পেয়ে তৃতীয় লিঙ্গের মনিষা বলেন, অন্যের করুণায় আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়েছে। ছিল না নিজের কোন বাড়ি ও জমি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর জন্য সবসময় দোয়া করবো। কিন্তু সমাজে আমরা এখনো পদে পদে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছি। আমরা যাতে সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারি এজন্য প্রধানমন্ত্রীর সু–নজর কামনা করছি। মনিষার মতো বদলে গেছে খুরুশকুল উত্তর হিন্দু পাড়ার শারীরিক প্রতিবন্ধী ধনঞ্জয়ের জীবন। ২ ছেলে নিয়ে সুপারি বিক্রি করে এ বাড়ি ও বাড়ি কেটেছে তার জীবন। কিন্তু এখন তিনি জমিসহ ঘরের মালিক। তাই তার যেন খুশীর সীমা নেই।
কক্সবাজারে আরও ভূমিহীন মানুষ বাদ গেলে আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানালেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সারা বিশ্বের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য জনপ্রতিনিধিদের।
কক্সবাজারে ৯টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯২৫টি। এর আগে জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও কুতুবদিয়ায় ৪ হাজার ৬৬৪টি পরিবারের মধ্যে গৃহ নির্মাণ করে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ৫ম পর্যায়ের ২য় ধাপে কক্সবাজারের সদর উপজেলায় ৭৫টি, ঈদগাঁও উপজেলায় ১৪৬টি এবং মহেশখালী উপজেলায় ৪০টিসহ মোট ২৬১টি পরিবারের মাঝে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করা হয়। আর এরই মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা গৃহ ও ভূমিহীনমুক্ত হলো।