জনবল সংকটে ভোগান্তি

নিয়োগের চাহিদা দিয়ে এনবিআরে চিঠি ।। চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩ মার্চ, ২০২১ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

জনবল সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রাম দপ্তরের কার্যক্রম। যে কাজ একদিনে হওয়ার কথা, সেটি নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে এক সপ্তাহ পর্যন্ত। ফলে সেবা গ্রহীতাদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একইসাথে দপ্তরের নিয়মিত প্রিভেন্টিভ কার্যক্রমও এক প্রকার স্থবির হয়ে আছে। এতে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে। তবে ইতোমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের চাহিদা দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বরাবর চিঠি লিখেছেন বন্ড কমিশনার।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের আওতাধীন গার্মেন্টস বন্ড প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৩৮টি। এছাড়া এঙেসোরিজ বন্ড রয়েছে ৩১৬টি। এর বাইরে চারটি ইপিজেডের (সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, কোরিয়ান ইপিজেড এবং কুমিল্লা ইপিজেড) আওতাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৭৪টি, মীরসরাই ইপিজেড এবং হোম কনজাম্পন বন্ড ৪৯টি, ডিপ্লোম্যাটিক বন্ড ৪টি, ডিউটি ফ্রি শপ ২টিসহ মোট এক হাজার ৪৯৩টি বন্ডেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক বন্ডেড প্রতিষ্ঠান তদারকি করার মতো জনবল চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দপ্তরে নেই।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম দপ্তরে দুটি অতিরিক্ত কমিশনারের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন একজন। এছাড়া যুগ্ম কমিশনারের দু্‌ই পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পদই শূন্য রয়েছে এবং উপ-কমিশনারের তিনটি পদের মধ্যে কাগজে কলমে দুইজন কর্মরত থাকলেও বর্তমানে একজন অষ্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা ছুটিতে আছেন। অর্থাৎ ওই পদে বর্তমানে আছেন একজন। অপরদিকে সহকারী কমিশনারের সাতটি পদের বিপরীতে বর্তমানে কাজ করছেন ৩ জন, এরমধ্যে সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি একজন সহকারী কমিশনার অবসরোত্তর ছুটিতে চলে যান। অন্যদিকে সহকারী রজাস্ব কর্মকর্তার ৯২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৪০ জন এবং অবশিষ্ট ৫২টি পদই শূন্য রয়েছে।
এদিকে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত কমিশনারকে এক হাজার ৪৯৩টি প্রতিষ্ঠান তদারকি করতে হচ্ছে। এছাড়া একজন উপ-কমিশনারকে ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠান এবং একজন সহকারী কমিশনারকে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান দেখতে হচ্ছে। প্রয়োজনের অপ্রতুল জনবল দিয়ে সবগুলো প্রতিষ্ঠান তদারকি করা দূরূহ হয়ে পড়েছে। একই সাথে বর্তমানে ১২০টি বন্ডেড ওয়্যারহাউসের বার্ষিক নিরীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে নিরীক্ষা কার্যক্রমেও গতিশীলতা আনা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রাম দপ্তর থেকে একজন যুগ্ম কমিশনার দুইজন উপ কমিশনার এবং ১০ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নিয়োগে ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেন কমিশনার এ কে এম মাহাবুবুর রহমান। একই সাথে কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমি থেকে জরুরি ভিত্তিতে চারজন কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর সংযুক্ত করার অনুরোধও জানানো হয়। বর্তমানে এসব কাজের জন্য ২৩টি পদ থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র ৫ জন, শূন্য পদ রয়েছে ১৮টি। অর্থাৎ, ৭৮ দশমিক ২৬ শতাংশ পদই খালি।
জানতে চাইলে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার একেএম মাহাবুবুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, জনবল সংকটের কারণে আমাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যা আছে, তা দিয়ে মোটামুটি চালানো গেলেও নিচের দিকের পদগুলোতে বিশাল শূন্যতা রয়েছে। ফলে কাজের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতায় পড়তে হচ্ছে। কারণ দিন দিন কাজের পরিধি বাড়ছে। কিন্তু তুলনামূলক জনবলের সংখ্যা কিন্তু বাড়েনি। তাই আমরা জরুরি ভিত্তিতে কিছু জনবল দেয়ার জন্য এনবিআরের কাছে চিঠি লিখেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচসিকের সাত প্রকৌশলীকে শোকজ
পরবর্তী নিবন্ধ৭শ টন পাথরসহ ডুবল বাল্কহেড