রবীন্দ্র সৃজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরেণ্য সাহিত্যিক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং গণমানুষের প্রিয় ব্যক্তিত্ব। রাজনীতিবিদরা রাজনীতিতে আসেন দেশের সেবা করার জন্য। আর সাহিত্যিকরা সংশ্লিষ্ট হন সাহিত্যের সেবা করার জন্য। সাহিত্যের একটি অনন্য শাখা শিশুসাহিত্য। শিশুদের বাদ দিয়ে সাহিত্য হয় না। শিশুসাহিত্য এখন অনেক সমৃদ্ধ। আমরা এক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়েছি। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুলের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ছড়া লেখা খুব কঠিন কাজ। যারা ছড়া লেখেন কঠিন কাজটাই সম্পাদন করেন। কবি–সাহিত্যিকরা শাসক–নওয়াবদের কাছে যান না। তারা সব সময় গণমানুষের কাছে থাকেন। জনতার সাথে থাকাটাই ছড়াকার ও লেখকদের কাজ।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করেছেন। একজন বড় মাপের মানুষ ছিলেন তিনি। মহান এ ব্যক্তিত্বের নামে প্রবর্তিত শিশুসাহিত্য পুরস্কার যারা পেলেন তার সত্যিই ভাগ্যবান। যে কোনো পুরস্কার আনন্দের, যে কোনো পুরস্কার গৌরবের। আমি পুরস্কারপ্রাপ্তদ্বয় শিশুসাহিত্যিকদের অভিনন্দন জানাই।
চট্টগ্রাম একাডেমি প্রবর্তিত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকাস্থ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য ছড়াসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন, কবি–শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া, শিশুসাহিত্যিক রহীম শাহ, খালেদপুত্র স্লোগান সম্পাদক মোহাম্মদ জহির, মোহাম্মদ জোবায়ের। অনুভূতি ব্যক্ত করেন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুসাহিত্যিক আজিজ রাহমান (কিশোর কবিতাগ্রন্থ রঙ লেগেছে পাতায় পাতায়) এবং সজল আশফাকের (উপন্যাস– প্রজাপতি ব্যাজ) পক্ষে তার ছোটভাই আখলাক জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাচিকশিল্পী আয়েশা হক শিমু।
শুরুতেই প্রধান অতিথি পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও অর্থ তুলে দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম একাডেমির মহাপরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী।
এর আগে প্রথম পর্বে শিশুসাহিত্যিক দীপক বড়ুয়ার সভাপতিত্বে কথামালায় অংশ নেন অংশ বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত মিলন কান্তি দে, অধ্যক্ষ মাজহারুল হক, সাংবাদিক লেখক জসীম চৌধুরী সবুজ, সাংবাদিক কবি এজাজ ইউসুফী, টইটম্বুর সম্পাদক নওশেবা সবিহ কবিতা, ব্যাংকার জয়নাল আবেদীন, প্রাবন্ধিক রেজাউল করিম স্বপন, সংগঠক মহসীন চৌধুরী, অধ্যাপক সুপ্রতিম বড়ুয়া, লেখক জাহাঙ্গীর আজাদ। বক্তব্য দেন প্রাবন্ধিক গবেষক নেছার আহমদ। কবি রাশেদ রউফের সঞ্চালনায় ছড়া–কবিতা পাঠে অংশ নেন কবি বিপুল বড়ুয়া, অরুণ শীল, লেখক এসএম মোখলেসুর রহমান, প্রাবন্ধিক বাসুদেব খাস্তগীর, কবি আবুল কালাম বেলাল, খালেদপুত্র মোহাম্মদ মুনির, শিবু কান্তি দাশ, মোস্তফা আনসারী, ইফতেখার মারুফ, ইমরান পরশ, কামাল হোসাইন, অপু বড়ুয়া, মনজুর আলম, মোশতাক রায়হান, ইসমাইল জসীম, গোফরান উদ্দীন টিটু, জসীম উদ্দিন খান, রুনা তাসমিনা, সৈয়দা সেলিমা আক্তার, মাহবুবা চৌধুরী, লিপি বড়ুয়া, সালাম সৌরভ, সুজন সাজু, সুসেন কান্তি দাশ, সুবর্ণা দাশ মুনমুন, সরোয়ার আরমান, সরোয়ার রানা, ননী গোপাল চন্দ্র দাশ, চিন্ময় রায় চৌধুরী, সাহানারা খাতুন, শিপ্রা দাশ, ওমর আলী, নাদিয়া খানম, কানিজ ফাতেমা লিমা, মিলন বনিক, নুরুন্নাহার ডলি, সরওয়ার আরমান, তানভীর হাসান বিপ্লব, রহমান রনি, সুরভি কান্তা, গৌরী সবর্ববিদ্যা, গৌতম কানুনগো, স্মরণিকা চৌধুরী, রায়হানা হাসিব, জাহানারা মুন্নী, আহমদ মহিউদ্দীন শিবলী, মনোয়ারা বেগম, নুর নাহার নবী, মোমিন মেহেদী, রেবেকা সুলতানা, এম. কামাল উদ্দিন, আয়মান রউফ প্রমুখ। কবিতা আবৃত্তি করেন, শামীমা আকতার, চন্দ্রিকা বন্দোপাধ্যায়, গৌরী সর্ববিদ্যা, কামরুন নাহার রোজী প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি লুৎফর রহমান রিটন বলেন, চট্টগ্রামের বন্ধুরা আমাকে খুব ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসি চট্টগ্রামকে এবং চট্টগ্রামের বন্ধুদের। এখানে অনেক শিশুসাহিত্যিক। তারা শিশুসাহিত্যে অবদান রেখে চলেছেন।
বিশেষ অতিথি কবি সুজন বড়ুয়া দুই লেখকের পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রন্থের আলোচনা করে বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার যারা পেলেন তারা দুজনই শক্তিমান লেখক। আমি আশাবাদী, তারা আরও অনেক বড় পুরস্কারের অধিকারী হবেন।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কবি রাশেদ রউফের নেতৃত্বে সাহিত্যের জাহাজ বোঝাই করে যেন বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে সাহিত্যিকরা ঢাকায় এসেছেন। ঢাকার সাথে চমৎকার একটি মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন তারা। এ বন্ধন অটুট থাকুক। সাহিত্যের জয়যাত্রাও অব্যাহত থাকুক।