পাহাড়কে পাহাড়ের আদলে রেখে জঙ্গল সলিমপুরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কার্যক্রমে গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের পরিবেশ এবং প্রতিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে পুরো পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা হবে। পাহাড়ের গায়ে আর কোনো আঁচড় লাগতে না দেয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুরো ব্যাপারটি নিয়ে তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী আজ সকালে জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ি অঞ্চল পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির অনুমোদন এবং বাস্তবায়নে তোড়জোড় চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সন্তান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হাতেই স্টিয়ারিং দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারটি বর্তমানের স্থান থেকে সরিয়ে জঙ্গল সলিমপুরে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি ইকোপার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে বিশ্বমানের একটি হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র, নভোথিয়েটারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় বর্তমানে কয়েক হাজার ভূমিহীন মানুষ বসবাস করছে। তাদেরকেও এই মহাপরিকল্পনায় পুনর্বাসন করা হবে। তবে বর্তমানে তারা যেভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাহাড় দখল করে রয়েছে সেভাবে না রেখে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পুনর্বাসন করা হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করা হবে। বর্তমানে যে সব ভূমিদস্যু এলাকা দখল করে রেখেছে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে।
জঙ্গল সলিমপুরে গৃহীত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোনো ধরনের সংশয় নেই বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এটি আসলে শুধু সময়ের ব্যাপার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা আজ সকালে জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শন করবেন। প্রস্তাবিত এলাকাটি পরিদর্শনের পর তথ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের সাথে সমন্বয় করে প্রকল্পটি যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত হয় সেই পদক্ষেপ নেবেন।
মহাপরিকল্পনার ব্যাপারে বলতে গিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ে আর যেন কোনো আঁচড় না লাগে সেজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পুরো এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে, কিন্তু পাহাড়ের আদল পাল্টাবে না। আমরা পাহাড়, পরিবেশ এবং প্রতিবেশকে অক্ষুণ্ন রেখেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব ধরণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের জন্য ভালো কিছু করার ইচ্ছে থেকেই এই মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মাননীয় তথ্যমন্ত্রী এবং মেয়র মহোদয় শুক্রবার জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন বলেও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান উল্লেখ করেন।