ছুরি হামলায় শিশু হত্যার জেরে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে নতুন করে দাঙ্গা

| সোমবার , ৫ আগস্ট, ২০২৪ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ইংল্যান্ডের সাউথপোর্ট শহরে ছুরি হামলা চালিয়ে তিন শিশুকে হত্যার পর থেকে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার এসব সহিংস বিশৃঙ্খলার ঘটনার পুলিশ আহত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। সাউথপোর্টে শিশুদের নাচের ক্লাসে ছুরি হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন একজন উগ্রইসলামপন্থি অভিবাসী, অনলাইনে দ্রুত এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর ও নগরে শত শত অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারী দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে। খবর বিডিনিউজের।

রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ছুরি হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর অ্যাক্সেল রুডাকুবানার জন্ম ব্রিটেনে। কিন্তু তারপরও অভিবাসনবিরোধী ও মুসলিমবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভ এখন সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে রূপ নিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অংশে অবস্থিত চারটি শহর লিভারপুল, ব্রিস্টল, হাল ও বেলফাস্টে সহিংস বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে। অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা বর্ণবাদবিরোধী গোষ্ঠীর মুখোমুখি হওয়ায় বিশৃ্‌ঙ্খল মারামারি এবং ইট ও বোতল ছোড়াছুড়ি হয়। পরস্পর বিরোধী কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে, যাদের অধিকাংশই তরুণ, সংঘর্ষ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।

মার্সিসাইড পুলিশ জানিয়েছে, লিভারপুলে দুই পুলিশ কর্মকর্তার মুখের হাড় ভাঙে গেছে এবং আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নগরীর উত্তরপশ্চিমাংশে এসব ঘটনা ঘটেছে। এখানে প্রায় ৭৫০ জন বিক্ষোভকারী ও সমসংখ্যক বিরোধী বিক্ষোভকারী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। লিভারপুলে অন্তত দুটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ব্রিস্টলেও একই দৃশ্য দেখা গেছে। তবে এখানে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি ছিল। টেলিভিশনের ফুটেজে তাদের দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে দেখা দেছে।

বেলফাস্টে কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বেলফাস্টে নিজের ক্যাফের ভাঙা কাচের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রাহমি আকিওল জানান, কয়েক ডজন লোক বোতল ও চেয়ার নিয়ে তার দোকানে হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, তারা কেন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে তার কোনো কারণ আমার জানা নেই। আমি এখানে ৩৫ বছর ধরে বসবাস করছি। আমার স্ত্রী, আমরা সন্তানরা এখানকার বাসিন্দা। কী বলব বুঝতে পারছি না, পুরো ঘটনাটাই খুব ভয়ঙ্কর। ব্রিটেন জুড়ে পুলিশ সহিংস বিশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে চুরি এবং উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে সম্পদের ক্ষতি করার মতো অপরাধের জন্য কয়েক ডজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবার সাউথপোটের্র একটি মসজিদে হামলার পর শহরগুলোজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং দেশজুড়ে মসজিদগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজার স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৫
পরবর্তী নিবন্ধসাকিব-শরীফুলদের ব্যর্থতার দিনে হারল তাদের দল বাংলা টাইগার্সও