২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে। সে বছর ২ জুলাই সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছিল। এরপর আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। তা অব্যাহত ছিল চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কিন্তু ২৯ মার্চ পুরনো রেকর্ড ভেঙে একদিনে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১৮১ জন। ৩০ মার্চ ৫ হাজার ৪২ জন, ৩১ মার্চ ৫ হাজার ৩৫৮ জন, ১ এপ্রিল ৬ হাজার ৪৬৯, ২ এপ্রিল ৬ হাজার ৮৩০ ও ৩ এপ্রিল ৫ হাজার ৬৮৩ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। গতকাল রোববার আক্রান্ত বিবেচনায় সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭ হাজার ৮৭ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একদিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৩ জনের। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জনে। তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার ২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার। এ বছর ৩১ মার্চ তা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়। গত বছর ৩০ জুন একদিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৭০৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮২ জন হয়েছে। বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩ কোটি ৮ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৪৭ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২২৭টি ল্যাবে ৩০ হাজার ৭২৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ আর নারী ৮ জন। তাদের মধ্যে ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন, বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। তাদের মধ্যে ৩৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৩৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন করে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।