চেতনানাশকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু অজ্ঞান পার্টির ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

যৌনশক্তি বাড়ানোর ওষুধের নামে অজ্ঞানপার্টির দেওয়া চেতনানাশক খেয়ে প্রাণ গেলো মাছ ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দের। এ ঘটনায় জড়িত অজ্ঞানপার্টির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানায় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটটি। এর আগে ১ জানুয়ারি দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী ও হালিশহর থেকে তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কাদিরপুর গ্রামের ইব্রাহীমের ছেলে মহিন উদ্দিন (৩০), একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪২) ও ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার হরিপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৪২)। তারা নগরীর হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানিয়েছে পিবিআই।

পিবিআই জানায়, ভিকটিম আবু ছৈয়দ একজন মাছ ব্যবসায়ী। গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালী হলেও সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর ফিশারিঘাটে মাছ কেনার জন্য যান আবু ছৈয়দ। মাছ নিয়ে অলংকার মোড় থেকে স্ত্রীকে ফোন করে বাসায় ফেরার কথা জানায়। কিন্তু সকাল ৯টায় বাসায় না ফেরায় স্ত্রী ফোন করে তার মোবাইল বন্ধ পান।

পরে আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে আবু ছৈয়দকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট এলাকায় একটি বাসের ভেতর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন ৬ অক্টোবর মারা যান আবু ছৈয়দ। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের ছেলে। মামলাটিতে তদন্তে নেমে অজ্ঞানপার্টির হদিস পায় পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, সীতাকুণ্ডে আবু ছৈয়দকে চেতনানাশক খাইয়ে সর্বস্ব লুটের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি প্রথম অবস্থায় ক্লুলেস ছিল। এজন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়াতদন্তে শুরু করে। পরে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়। গত ১ জানুয়ারি হালিশহর ও পাহাড়তলীতে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞানপার্টির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, হালুয়া জাতীয় চেতনানাশক পদার্থের সঙ্গে মধু মিশিয়ে আবু ছৈয়দকে খাইয়ে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং তার ব্যবহৃত মোবাইলটি নিয়ে যায়। গ্রেফতারদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রফিকের বাসা থেকে ঘুমের ওষুধ, মধু, ইউনানি ওষুধসহ বিভিন্ন ওষুধের পুস্তিকা উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি ভিকটিমকে বহনকারী বাসটি জব্দ করা হয়। গ্রেফতারদের সোমবার সীতাকুণ্ড থানা পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়কে ‘আট বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু’ দেখেছে ২০২২
পরবর্তী নিবন্ধঅপহরণের পর মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ, ছড়ালো ভিডিও