চুরিতে দুজন, ক্রেতা তিনজন

নগরী ও আশপাশ এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চোর চক্রের মূল হোতাসহ ৫ জন গ্রেপ্তার ।। ২৪টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

নগরী ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল চুরির চক্রের মূল হোতাসহ ৫ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। গত ২৬ মার্চ সিএমপির ডিসি দক্ষিণ বিভাগের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেন উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলোসাতকানিয়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বণিক পাড়ার মৃত ধনঞ্জয় ধর প্রকাশ ধনরাম ধরের ছেলে মিঠন ধর (২৯), সন্দ্বীপের কালাপানিয়া এলাকার মো. শাহাজাহানের ছেলে মো. বাবর প্রকাশ বাবুল (৩৫), একই এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. শাহেদ (২৬), মৃত নুরুল আলমের ছেলে মো. রিপন (৪০) ও লোহাগাড়ার আমিরাবাদ এলাকার নুরুল আব্বাসের ছেলে মো. খোরশেদ আলমের ছেলে (২৯)

পুলিশ জানায়, এ চক্রের সদস্য মিঠন ও খোরশেদ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। সুবিধাজনক স্থানে তালা ছাড়া মোটর সাইকেল দেখলেই সুযোগ বুঝে চালিয়ে তারা চলে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিঠন জানিয়েছে, যেসব মোটর সাইকেল তারা চুরি করে, সেগুলো বাবরের কাছে ১০/১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। হাতবদল হয় মূলত পুরাতন স্টেশন ও ফৌজদারহাট টোল রোড এলাকায়। আর বাবর ওসব মোটর সাইকেল কুমিরা অথবা বাঁশবাড়িয়া ঘাট দিয়ে ট্রলারে করে সন্দ্বীপ নিয়ে শাহেদ, রিপনসহ অন্য আরও কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। সন্দ্বীপের আকবর হাট এলাকায় শাহেদের একটি মোটর সাইকেল গ্যারেজ আছে। সে বাবরের কাছ থেকে মোটর সাইকেল কিনে নিয়ে মেরামত করে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে। সন্দ্বীপ থেকে উদ্ধার করা ২৩ মোটর সাইকেলের মধ্যে ১১টি শাহেদের গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ চক্রটি গত কয়েক বছরে এত বেশি মোটর সাইকেল চুরি করেছে যে তারাও সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। এর আগেও মিঠন এবং বাবর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। পুলিশ জানায়, এ চক্রটির মূল টার্গেট থাকে ১০০/১২০ সিসির মোটর সাইকেল। এর কারণে হিসেবে তারা পুলিশকে বলেছে, এসব মোটর সাইকেলের চাকায় তালা লাগানো না থাকলে তাদের কাছে থাকা চাবি দিয়ে খুব সহজেই চালু করতে পারে। যার কারণে তারা সেগুলোকে বাংলা বাইক বলে।

এই ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল কবির বলেন, শনিবার রাতে নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে মিঠন ধর ও বাবর নামে (মোটরসাইকেল চুরির মূলহোতা) দুইজনকে একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে জানায়, সহযোগী মো. শাহেদ, মো. রিপন, মো. খোরশেদ আলম, মো. দিদার হোসেন, মো. নজরুলের সাহায্যে নগরী ও বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই মোটরসাইকেল সন্দ্বীপ ও কঙবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে তারা। তাদের দেওয়া তথ্যে রাতে সন্দ্বীপে অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোর মো. শাহেদ ও মো. রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তবে তাদের আরও দুই সহযোগী মো. দিদার হোসেন ও মো. নজরুল ইসলাম প্রকাশ তাহের ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে মিঠনের দেওয়া তথ্যমতেখোরশেদ আলমকে ব্রিজঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আসামি মিঠন ধরের বিরুদ্ধে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া থানায় ৩টি চুরির মামলা রয়েছে। মো. বাবরের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী ও খুলশী থানায় ২টি মোটরসাইকেল চুরির মামলা আছে। এছাড়া খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মোটরসাইকেল চুরির ১টি মামলা আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৯ কৃতী ব্যক্তিকে চসিকের স্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতিদিন একসঙ্গে দুই হাজার মানুষের ইফতার