বই-পুস্তকে ভুল শুধরে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরায় নতুন প্রজন্মকে বিপথে চালিত করা যাবে না দাবি করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, দেশ সঠিক পথেই আছে। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মাঝে মাঝে ভাবি আমাদের প্রধানমন্ত্রী যদি বেঁচে না থাকতেন…। ওনারা দুই বোন যদি বিদেশে না যেতেন, ওনাদেরও একই পরিণতি হত। তাহলে কী হত? যে বাংলাদেশ আমরা অতীতে দেখেছি, যে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। এটা কি আর সঠিক জায়গায় আনা হত? আমার মনে হয় না। মিথ্যা ইতিহাসই সঠিক হিসেবে মানুষের কাছে প্রমাণ করত। বিশেষ করে আমাদের জেনারেশন। তখন আমরা বেড়ে উঠছি। আমি না হয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছিলাম, আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন ছিলাম। আমাদের জেনারেশনের অন্য অনেকে তো তা ছিল না। তাদের বই পুস্তকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রামের আনোয়ারার এ সংসদ সদস্য বলেন, কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে আমাদের নেত্রীর নেতৃত্বে। আস্তে আস্তে বই পুস্তকে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়। এবং পরবর্তী জেনারেশনকে চাইলেও মিসগাইড করতে পারবেন না। বরং আপনার সাথে তারা আর্গুমেন্ট করবে। দে নো, ইউ আর রং।
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি একটা জাস্ট গল্প বলি। যে কোনো এক রাজাকার…। ফাঁসি দেওয়া হচ্ছিল। টিভিতে আমি রাত্রে বসে দেখছিলাম। আমার পরিচিত ছিল। নাম বলতে চাই না। আমার ছেলে আমার পাশে বসা ছিল। তখন সে ১০-১১ বছরের। সে আমাকে তাৎক্ষণিকভাবে কী বলে জানেন, ফাঁসি দিয়েছে খুব ভালো হয়েছে। স্বাধীনতার বিরোধী ছিল। আই ওয়াজ রিয়েলি ইমপ্রেসড। আমার ছেলে, সে একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতি। আই রিয়েলি ফেল্ট সো গুড। তার স্পিরিট সো স্ট্রং। দিজ ইস হোয়াট বাংলাদেশ ইজ।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমাদের চিন্তার কিছু নেই। মনে করি দেশ সঠিক পথে আছে। নতুন জেনারেশন দেশ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে। ট্রেন ডিরেইল হয়েছিল এখন ট্র্যাকে আছে এবং সঠিকভাবে চলছে। চলতেই থাকবে ইনশাল্লাহ। সিএমপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সময়ের সাথে আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আপনারা ভালো কাজ করছেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনাদের সুনামের সমস্যা হচ্ছে। অনুরোধ করব, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের জনগণকে ভালোবাসতে হবে। এবং জনগণকে শান্তিতে রাখতে হবে। জনগণকে যথাযথ সেবা দিতে হবে।
কিছু জায়গায় হয়রানির উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, অনেক থানায় হয়রানি হচ্ছে। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, ওখান থেকে বেরিয়ে আসতে। ভালো সেবা দিতে চেষ্টা করুন। আপনাদের তো দেওয়া হচ্ছে। আপনারা যা চাচ্ছেন। আগের থেকে অনেক বেশি সিকিউরড। আপনাদের ফ্যামিলি সিকিউরড। একটা সময় ছিল আপনাদের পরিবার ইনসিকিউরড ছিল। এখন কিন্তু তা নেই।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও এ কে এম সরোয়ার কামাল। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।