চালের বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তায় বেড়েছে ২০০ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

জ্বালানি তেল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বস্তায় বেড়েছে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষকের ঘরে ইতোমধ্যে আমন ধান ওঠা শুরু হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে কেবল পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে দাম বাড়ানো অযৌক্তিক। চালের আড়তদাররা বলছেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর দেশের উত্তরাঞ্চলীয় মোকামগুলো থেকে চাল পরিবহনে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এই বাড়তি ভাড়া চালের দামের সাথে যোগ হচ্ছে। গতকাল নগরীর দুই প্রধান চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে জিরাশাইল সিদ্ধ, নাজিরশাইল সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, পাইজাম সিদ্ধ, পাইজাম সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, কাটারিভোগ সিদ্ধ, কাটারিভোগ আতপ, বেতি আতপ ও মোটা সিদ্ধের দাম বস্তায় সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত বড়েছে।
চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে পাইকারিতে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা এবং মিনিকেট আতপ ৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। অন্যদিকে পাইজাম সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ১৫০ টাকা, বেতি আতপ ২ হাজার ৩৫০ টাকা, পাইজাম আতপ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা, মোটা সিদ্ধ প্রতি বস্তা ১৫০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ১৫০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ১৫০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার টাকা এবং কাটারিভোগ সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ার পর পর পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে সব ধরনের চালের বাজার বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এছাড়া সরকার বর্তমানে আমন ধান-চাল ক্রয় করছে। এটার কারণে বাজারে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। মূলত জ্বালানি তেল বাড়ার কারণে চালের বাজার বেড়েছে। চট্টগ্রাম রাইচ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্লাহ বলেন, পরিবহন ভাড়া ভাড়ার পাশাপাশি বর্তমানে ধানের দামও বেড়েছে। ফলে চালের বাজার বাড়ছে। কৃষকের ঘরে এখন আমন ধান ওঠা শুরু হয়েছে। দাম যেহেতু কিছুটা বেশি, তাই কৃষকরা যে যার অবস্থান থেকে কিছু ধান বাড়তি দামে বিক্রির আশা ধরে রেখেছেন।
চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম আজাদীকে বলেন, চালের ব্যবসায় এখন অনেক শিল্পগ্রুপ যুক্ত হয়েছে। এসব গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ধান-চাল সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখছেন। ফলে বাজারে সরবরাহের সাথে চাহিদার একটা ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়টাতে মনিটরিংটাও হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ৩১ অক্টোবর খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় জানিয়েছেন, আমন মৌসুমে ৪০ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ২৭ টাকা কেজি দরে ৩ লাখ টন ধান কিনবে সরকার। ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে বলে সেই সময় জানানো হয়েছিল। গত বছর ২৬ টাকা কেজি দরে আমন ধান ও ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল কিনেছিল সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলায়ন কামরুন মালেককে সম্মাননা দিল মা ও শিশু হাসপাতাল
পরবর্তী নিবন্ধভালো নেই ফিশারিঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা