কৃষকের ঘরে মাত্র আমন ধান উঠেছে। তারপরও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে চালের দাম। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অভিযানের পরও নিয়ন্ত্রণে নেই বাজার। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে পাইকারিতে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বেড়েছে। চালের এমন অব্যাহত দর বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে।
চালের আড়তদাররা বলছেন, এই সময়ে চালের দাম বাড়ার কথা নয়। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের মোকাম মালিকরা ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে চালের দাম বৃদ্ধি করছেন। এছাড়া অনেক শিল্পগ্রুপ ধান–চাল মজুদ করে বাহারি মোড়কে বাজারকাত করছেন। এটি বাজার বাড়ার অন্যতম কারণ। নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নাজিরশাইল সিদ্ধ, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি আতপ, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪৫০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ৩০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ২৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ৩ হাজার ৪০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকা, বেতী আতপ ২৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ বস্তায় ৩০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়।
চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম আজাদীকে বলেন, এক মাস আগে আমন ধান উঠেছে। ধানের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তারপরও ‘ধান দাম বেড়েছে’ অজুহাতে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করেছেন মোকাম মালিকরা।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, বর্তমানে বাজারে চালের সরবরাহ সংকট রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা ধান মজুদ করে কৃত্রিম সংকট করে দাম বৃদ্ধি করছেন শুনেছি। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর নজরদারি করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আমরা মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল এনে বিক্রি করি। চট্টগ্রামে চাল ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার মতো অবস্থানে নেই।