রাত তিনটা। পুলিশ সদস্যরা বেছে বেছে নৈশ কোচ এবং দূরের যাত্রার ট্রাকগুলোকে দাঁড় করাচ্ছেন একের পর এক। এরপর গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছে চালক ও তার সহকারীকে। বেশিরভাগ চালকই হয়তো এটাকে পুলিশের চাঁদাবাজির নয়া কৌশল ভেবে বিভিন্ন অজুহাতে নামতে চাচ্ছেন না। কিন্তু পরে যখন দেখছেন কেটলি হাতে চা-কফি নিয়ে এগিয়ে আসছেন পুলিশ সদস্যরা, তখনই ভুল ভাঙে তাদের। খবর বাংলানিউজের।
জয়পুরহাটে এক চালকের ঘুমের কারণে যখন ঝরে যায় ১১টি তাজা প্রাণ, দেশের অন্য প্রান্ত চট্টগ্রামে তখন রাত্রিকালীন যানবাহন চালকদের ঘুম তাড়াতে অন্যরকম এই কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত পুলিশ সদস্যরা। গত ১ মাস ধরেই ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালানো বন্ধে সচেতনতামূলক উদ্যোগ ‘রিফ্রেশমেন্ট কর্নার’ চালু করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট জুড়ে নৈশ কোচ ও ট্রাক চালকদের এই অস্থায়ী বিশ্রামাগারে এনে গরম পানিতে মুখ ধোয়া, চা-বিস্কুট খাওয়ানোর পাশাপাশি চোখে ঘুম জড়ানো অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিপদ সম্পর্কে উপদেশ দিচ্ছেন সার্কেল এএসপি।
রাউজান পাহাড়তলী বাজার সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে তৈরি হয়েছে পুলিশের এই বিশেষ অস্থায়ী বিশ্রামাগার। গাড়ি থেকে নামানোর পর বেশ কিছুক্ষণ চালক ও সহকারীর সঙ্গে গল্প করছেন সার্কেল এএসপিসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা। ঝিমুনি রোধে সেখানে রাখছেন হাত-মুখে পানি দেওয়ার ব্যবস্থাও। তারপর ওয়ানটাইম কাপে চা, সঙ্গে বিস্কুট খাইয়ে সাবধানে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিয়ে তবেই গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা করিয়ে দিচ্ছেন তাদেরকে।
এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, শীতের রাতে গাড়ি চালাতে চালাতে অনেক চালকেরই চোখ বন্ধ হয়ে আসে। অসাবধানতায় প্রায়ই ঘটে যায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এ প্রেক্ষিতে চালকদের সচেতন করার লক্ষ্যেই মূলত মুখ ধোয়ার জন্য গরম পানি এবং চা-বিস্কুটের ব্যবস্থা সহযোগে আমাদের এই রিফ্রেশমেন্ট কর্নার। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষে তো সকল চালকের মুখোমুখি হওয়া বা সবার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব নয়। তাই যাদেরকে পাচ্ছি, তাদেরকেই অনুরোধ করছি তারা যেন তাদের সকল সহকর্মীর কাছে আমাদের বার্তটি পৌঁছে দেন।