চার খালে ১৩ ভাঙন

টানা বৃষ্টিতে বসতঘর ও কৃষিজমি বিলীন হওয়ার শঙ্কা

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৪টি খালে প্রায় ছোট-বড় ১৩টি ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। টানা বৃষ্টির ফলে খালের পানি বাড়ায় এলাকা প্লাবিত হওয়ার আতংকের মধ্যে রয়েছেন এলাকাবাসী। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বসতঘর, ভিটা, কৃষিজমি, মসজিদ, কবরস্থান ও চলাচলের রাস্তা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের তিন পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ডলু, টংকাবতী, বোয়ালিয়া ও বাইরখাল। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন কারণে খালের পাড় ভেঙ্গে গেছে। ডলুখালের মাস্টার পাড়া সড়ক, টংকাবতী খালের বণিক পাড়া, বোয়ালিয়া খালের রোকেয়া বাপের পাড়া জামে মসজিদ এলাকা ও বাইরখালের মৌলানা পাড়া সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ১৩টি ভাঙ্গন রয়েছে। অনেক স্থানে খালের পাড় স্থানীয়দের চলাচলের রাস্তা। ভাঙ্গনের কারণে মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত ২৯ জুন মাস্টার পাড়া এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটায় জনৈক আবুল কাশেম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও থেমে নেই মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ডলু, টংকাবতী, বোয়ালিয়া ও বাইরখালে রয়েছে ছোট-বড় একাধিক ভাঙ্গন। ভাঙ্গনের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বসতঘর, বসতভিটা, চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও ফসলি জমি। মাস্টার পাড়া এলাকায় রাতের আঁধারে এখনো কাটা হচ্ছে ডলুখালের পাড়। ড্রেজার মেশিন দিয়ে খালের পাড় ভেঙ্গে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। খালের পাড় ভাঙ্গনে অনেক স্থানে চলাচলের রাস্তাও বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্ষা মৌসুমের পরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় খালের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে খালের ভাঙ্গন অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়বে। এতে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে বসতঘর ও ক্ষেতের। ফলে ভাঙ্গন এলাকার বাসিন্দারা আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।
অপরদিকে, রোকেয়া বর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ জানান, বোয়ালিয়া খালের প্রায় ২০ ফুট গভীর ভাঙ্গনে চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও প্রাচীন কবরস্থান অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্মিত মসজিদটি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হোছাইন মুহাম্মদ শারপু জানান, তাঁর ওয়ার্ড দিয়ে প্রবাহিত ডলু, টংকাবতী, বাইর ও বোয়ালিয়াখালে ভাঙ্গনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। টানা বৃষ্টিতে খালের পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ভাঙ্গন এলাকায় খালের গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বসতঘর, বসতভিটা চলাচলের রাস্তা, মসজিদ ও কবরস্থান। ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম. ইব্রাহিম কবির বলেন, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উপর দিয়ে প্রবাহিত ডলু, টংকাবতী, বাইর ও বোয়ালিয়াখালের ভাঙ্গন পরিদর্শন করা হবে। ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচনে সবাই আসুক সেটাই চাই : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধফুটপাতে কাগজ কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু