ফল ও সবজি চাষ করে প্রথম বছরেই সাফল্য
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
মসজিদের ইমামের চাকরি ছেড়ে কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে বিভিন্ন ফলমূল ও শাকসবজি চাষে সফল হয়েছেন আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। রাঙ্গুনিয়ার একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেসময় মসজিদের আশপাশে বিভিন্ন ফল ও সবজি ক্ষেত করতেন। কৃষির প্রতি আলাদা টান থেকেই চাকরির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হয়ে হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা।
জানা যায়, আবদুর রহমানের (৩০) বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় হলেও তিনি দীর্ঘদিন যাবত রাঙ্গুনিয়ায় ইমামতি করার সুবাদে এখানেই অনেকটা স্থায়ী হয়েছেন। আগুনিয়া চা বাগানের কাছে পাহাড়ের পাদদেশে তার বাগানটি যেন সবুজে মোড়ানো। বাগানে গেলে যে কারো মন ভরে উঠবে। যেখানে সুস্বাদু বড়ই, পেয়ারা, কলা, তরমুজ, আমসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির গাছ মাথা তুলে আছে। আবদুর রহমান সাত কানি জমি বার্ষিক ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে লিজ নিয়ে মাত্র ১০ মাস আগেই চাষাবাদ শুরু করেছিলেন। শুরুতে তিনি ঝিনাইদহ থেকে ৬৩০টি পেয়ারা চারা, দুই জাতের ২০০টি বড়ই চারা সংগ্রহ করেন। রাউজান থেকে সংগ্রহ করেন ৪০০টি কলা গাছের চারা ও ৬০টি উন্নত জাতের আম গাছের চারা। পরে ধীরে ধীরে তরমুজ, পেঁপেসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজি চাষ করতে শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগান বড়ই, পেয়ারা, মরিচ, টমেটো, চিচিঙ্গা, বেগুনসহ নানা প্রজাতির সবজিতে ভরপুর। পাশাপাশি রয়েছে একটি ছোট ছাগলের খামারও। প্রতিদিন দূর–দূরান্ত থেকে তার বাগান দেখতে ও বড়ই কেনার জন্য মানুষ আসে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তার আড়াই লাখ টাকা খরচ হলেও প্রথম বছর পেয়ারা, বড়ই ও অন্যান্য সবজি থেকে বিনিয়োগ বাদে লাখ টাকা উপার্জনের আশা করছেন। এদিকে প্রথম বছরেই তার এমন সাফল্য দেখে এলাকার অনেক শিক্ষিত যুবকও তাকে অনুসরণ করা শুরু করেছেন।
কৃষক আবদুর রহমান জানান, ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি টান ছিল। শুরুতে পাঁচ বছর চাকরি করলেও বর্তমানে নিজেকে একজন কৃষক হিসেবে দেখছেন তিনি। ১০ মাস আগে লাগানো তার ভারত সুন্দরী ও বল সুন্দরী বড়ই এবং পেয়ারা গাছে ফল এসেছে। প্রথম বছরে প্রতিটি বড়ই গাছে চার–পাঁচ কেজি ফলন হয়েছে। আগামী বছর এ ফলন ১৫–২০ কেজি হবে বলে আশা করেন তিনি। তবে তার দুঃখ একটাই, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় কৃষি বাগান করায় রাউজান থেকে কৃষি কার্ড পাননি তিনি। অন্যদিকে আইডি কার্ডে তার বাড়ি রাউজান হওয়ায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড সংগ্রহ করতে পারেননি। তিনি সরকারি সহযোগিতা পেলে তার কৃষি বাগান আরো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করতে চান।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, তিনি অন্য উপজেলার হওয়ায় সরকারি কোনো সুবিধা পাবেন না। তবে তার উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি চাইলে আমাদের অফিস থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।