চলে যেতে চাওয়া মুহিত গেলেন সবার শ্রদ্ধা নিয়ে

আজ সিলেটে দাফন

| রবিবার , ১ মে, ২০২২ at ৭:১৬ পূর্বাহ্ণ

কর্মজীবন শেষে রাজনীতিতে নেমে এক দশক সামলেছেন অর্থমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ এক দায়িত্ব; তারপর ছিলেন অখণ্ড অবসরে। এই অবসরে তিনি জীবন থেকে বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানালেন তার ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল শনিবার দুপুরের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর সময় ভাইয়ের শেষ সময়ের স্মৃতিচারণ করেন তিনি। মোমেন বলেন, শেষ কয়েকদিন যাবৎ তিনি বারবার বলছিলেন, তিনি চলে যেতে চান। বলতেন, ‘আমার কাজ শেষ, এবার আমি চলে যেতে চাই, বাকিটা তোমরা দেখো’। গত এক সপ্তাহ চলে যাওয়ার জন্য স্থির হয়েছিলেন তিনি। অবশেষে তিনি চলেই গেলেন। এদিকে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সিলেটে শহরের রায়নগরে পারিবারিক কবরস্থানে আজ দাফন করা হবে। খবর বিডিনিউজের।

৮৮ বছর বয়সী মুহিত শুক্রবার রাতে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত বছর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

গতকাল সকালে গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজার পর পৌনে ১টায় মুহিতের কফিন নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবির আহমেদ কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিনের পক্ষে সংসদের সার্জেন্ট অ্যান্ড আর্মস কমডোর এম নাইম রহমান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের উপদেষ্টা পরিষদের প্রয়াত এই সদস্যের প্রতি।

১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি) যোগ দেওয়া মুহিত পরের সিকি শতাব্দী পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরিতে থাকাকালে ১৯৫৭৫৮ সালে তিনি অঙফোর্ডে লেখাপড়া করেন। ১৯৬৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমপিএ ডিগ্রি পান। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন মুহিত। স্বাধীনতার পর সচিব হিসেবে ১৯৮১ সালে স্বেচ্ছা অবসরে যান। এরপর ‘অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে’ কাজ শুরু করেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও আইএফএডিতে। মাঝে এরশাদ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে পালন করেন এক বছর। এই শতকের শুরুতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সরাসরি রাজনীতিতে নামেন। ২০০৮ সালে এমপি হওয়ার পর হন অর্থমন্ত্রী। টানা ১০ বছর সেই দায়িত্ব পালনের পর ২০১৮ সালে নিজেই অবসরে যান।

সিলেটে আজ দাফন : আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সিলেটে শহরের রায়নগরে পারিবারিক কবরস্থানে আজ দাফন করা হবে। গতকাল ঢাকার গুলশানে আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে তার ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এ কথা জানান। তিনি বলেন, আমাদের পৈত্রিক বাড়ি সাহেব বাড়ির পেছনে আমাদের গোরস্তান আছে। যেখানে আমাদের বাবা, মা, দাদাদাদি সবার কবর রয়েছে। সেখানে উনাকে দাফন করা হবে।

আজ সিলেটে নেওয়ার পর বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ রাখা হবে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এরপর দাফনের আগে দুপুর ২টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে হবে জানাজা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১২ ঘণ্টায় তিন মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধঈদের ছুটিতে চালু থাকবে বন্দর ও কাস্টমস