নগরীর যানজট নিরসনে চলতি বছরের মধ্যেই কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল ও বাকলিয়ায় মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে চান সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। নগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
গতকাল রবিবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের গণপরিবহন খাতের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড না থাকায় বাস–ট্রাকগুলো অনিরাপদভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। অনেক সময় এজন্য মামলার কারণে হয়রানি হয় গণপরিবহন সংশ্লিষ্টদের। এজন্য দ্রুত বাস টার্মিনাল ও বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ প্রয়োজন।
তারা বলেন, চট্টগ্রাম নগরকে যাত্রীসাধারণ, ব্যবসায়ী পর্যটকদের জন্য টার্মিনাল এর সুবিধা প্রদান বৃদ্ধি করতে পারলেই এই নগর বাণিজ্যিক নগর হিসাবে স্বীকৃতির পাশাপাশি সকল ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। বন্দর ব্যবহারকারীদের তথা আমদানি–রপ্তানিকারকদের আগমন–নির্গমণ সুগম হবে। ব্যবসায় গতি আসবে, যাত্রী পরিবহন বৃদ্ধি পাবে। নগর প্রাণবন্ত হবে, ব্যবসায়িক লেনদেন বৃদ্ধি পাবে, কর্মচঞ্চলতা বৃদ্ধি পাবে। টার্মিনাল ব্যবহারকারী গণপরিবহন চলাচল বৃদ্ধি হলে কর্পোরেশনের আয়ও বৃদ্ধি পাবে। জবাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর যানজট নিরসনে চলতি বছরের মধ্যেই কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল ও বাকলিয়ায় মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করব। আমি কথা চাই না, কাজ চাই। আমি চাই যানজট নিরসন হোক, জনগণ স্বস্তিতে চলাচল করুক। এ জন্য কুলগাঁও বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এছাড়া বাকলিয়াতে মিনি বাস টার্মিনালও নির্মাণ করা যেতে পারে। এটা যখন আমি উদ্বোধন করতে পারবো, তখনই বলব এটি আপনাদের জন্য উপহার।
তিনি স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন পাঁচ–ছয় জন প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কিভাবে গণপরিবহন খাতের জন্য আধুনিক সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতা করেন সাথে বাসচালকদেরও মতামত নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
এছাড়া, বাকলিয়ায় ছোট পরিসরে একটি মিনি বাস স্ট্যান্ড করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। মেয়র বলেন, বাকলিয়ায় জায়গার স্বল্পতা থাকলেও সেখানে একটি মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সেখানে বাস চলাচলের উপযোগী করে তুলবো। এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীদের নিয়ে সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন তিনি। মেয়র আশ্বাস দেন চট্টগ্রামের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও পরিকল্পিত করার জন্য তিনি সবধরনের উদ্যোগ নেবেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের জানানো অন্যান্য দাবি হলো– চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী যাত্রীসাধারনের আগমন–নির্গমন ব্যবস্থার পরিকল্পনার আওতায় উত্তরগামী বাস ও অন্যান্য যানবাহনের জন্য আধুনিক, মানসম্মত পরিবেশ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ, চট্টগ্রাম–হাটহাজারী, নাজিরহাট, রামগড়, খাগড়াছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলের জন্য আধুনিক মানসম্মত টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার অভিমুখী যাত্রীসেবা আরও গনমুখী করার লক্ষ্যে শাহ আমানত ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে পরিকল্পিত টার্মিনাল নির্মাণ, চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালকে আধুনিকরণ করা, চট্টগ্রাম–কাপ্তাই অভিমুখী বাস চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বর্তমান টার্মিনাল সংস্কার ও বর্ধিতকরণ, মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচলরত যাত্রীবাহী বাস মিনি বাস হিউম্যানহলার সমূহের জন্য এলাকা ভিত্তিক টার্মিনাল/ বে–টার্মিনাল নির্মাণ পার্কিং নির্দিষ্ট করণ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক কফিল উদ্দীন আহমদ, উপদেষ্টা কফিল উদ্দীন, আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, উপদেষ্টা একরামুল করিম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুছা, অলি আহম্মদ, মৃনাল চৌধুরী, আহসানুল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান, মো. জাফর, মো. মনসুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান, মো জাফর, মো খোরশেদ, মো শাহজাহান, মো. মাহবুব , মো. জাহাঙ্গীর, কামাল উদ্দিন, আলী চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আজম, মো রায়হান, মো হারুন, আনোয়ার প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।