দীর্ঘ সময় পর চালু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম শাটল ট্রেন। কিন্তু সীমিত সূচিতে ট্রেন চলায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি রয়েই গেছে। বিকালে এবং রাতে কোনো ট্রেন না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাজ ও টিউশনির জন্য শহরগামী শিক্ষার্থীদের। আবার যাদের দুপুর আড়াইটার পর ক্লাস বা পরীক্ষা শেষ হচ্ছে তারাও যেতে পারছে না ট্রেনে। এছাড়া রাতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা থাকলেও সেটিও বন্ধ রয়েছে।
করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় ক্যাম্পাস। বন্ধ হয়ে যায় শাটল চলাচল। কয়েক দফা সশরীরে পরীক্ষা শুরু হলেও শাটল চলাচল বন্ধই ছিল। দীর্ঘদিন পর গত ১৬ অক্টোবর থেকে সীমিত সূচিতে শাটল ট্রেন চলাচল শুরু করে কর্তৃপক্ষ। সকাল আটটা ও নয়টায় বটতলী স্টেশন থেকে ছেড়ে এসে দুপুর দেড়টা ও আড়াইটায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যাচ্ছে দুইটি শাটল। একটি ডেমু ট্রেন থাকলেও সেটিও চলছে না।
এরপর গত ১৮ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়া হয়েছে। পরেরদিন ১৯ অক্টোবর শুরু হয়েছে সশরীরে ক্লাস। বিভিন্ন বিভাগ ইতোমধ্যে সশরীরে ক্লাস শুরু করেছে। আবার চলমান রয়েছে পূর্বঘোষিত বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাসমূহ। হল-ক্যাম্পাস সব খোলা থাকায় ক্যাম্পাসমুখী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে চবির ভর্তি পরীক্ষা। সব মিলিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু শাটলের সীমিত সূচির কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
এ নিয়ে গতকাল রবিবার যাতায়াত সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন জানিয়ে প্রক্টর বরাবর একটি দরখাস্ত দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে ট্রেনের সূচি বাড়ানো ও বাস ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাল্গুনী দাস আজাদীকে বলেন, আমাদের অনেকের টিউশনিসহ নানা দরকারি কাজে শহরে যেতে হয়। কিন্তু রাতে কোনো ট্রেন না থাকায় দ্বিগুণ ভাড়া ও ঝামেলা সহ্য করে ক্যাম্পাসে ফিরতে হয়। রাতে লোকাল বাসে ক্যাম্পাসে ফেরা কষ্টকর, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারজান আকতার বলেন, গতকাল আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়েছে তিনটায়, কিন্তু শেষ ট্রেন ছিল আড়াইটায়। এজন্য লোকাল গাড়িতে দীর্ঘ জ্যাম ঠেলে আসতে হয়েছে। এতে সময় লেগে যায় বেশি। মাঝে মাঝে ভাড়াও দ্বিগুণ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসানে আজাদীকে বলেন, শিডিউল বাড়ানো হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে নতুন শিডিউলে ট্রেন চলবে। প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, মঙ্গলবার থেকে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে নতুন শিডিউলে ট্রেন চলবে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার পর পুরোদমে ট্রেন চলাচল নিয়ে আলোচনা করতে হবে।