চমেক হাসপাতালে বিশেষায়িত স্ট্রোক ইউনিটের যাত্রা শুরু

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার বাইরে এই প্রথম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে যাত্রা শুরু করেছে বিশেষায়িত স্ট্রোক ইউনিট। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নিউরোলজি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ইউনিটটির উদ্বোধন করেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির। এই ইউনিটে থ্রম্বোলাইসিসসহ স্ট্রোক রোগীদের অত্যাধুনিক চিকিৎসা দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. ওয়াহিদুর রহমানের নামে (ওয়াহিদুর রহমান মেমোরিয়াল স্ট্রোক ইউনিট) নতুন এই স্ট্রোক ইউনিটটির নামকরণ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, স্ট্রোক ইউনিটের মাধ্যমে চট্টগ্রামের রোগীরা অত্যাধুনিক চিকিৎসা পাবেন। ঢাকার নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটের পর বাংলাদেশে সরকারিভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ইউনিট সংযোজিত হয়েছে। এখানে বিশেষায়িত সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের ওয়ান স্টপ জরুরি সেবা কেন্দ্রে একটি নতুন সিটিস্ক্যান মেশিন খুব শিগগির সংযোজন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নিউরোলজি ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেক সময় লিফটের পাশে বারান্দায় রোগী ভর্তি দিতে হয়, এটি অমানবিক। আমরা চেষ্টা করছি, এই ওয়ার্ডের একটি বর্ধিত ওয়ার্ড খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
সভাপতির বক্তব্যে নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, এই স্ট্রোক ইউনিট গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো খুব দ্রুত সময়ে যে সব রোগী চিকিৎসা নিতে আসে, তাদেরকে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে একটি বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদান করা। এই থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক রোগীর হাতে পায়ে প্যারালাইসিস হওয়া রোধ করা যাবে। এই থেরাপি এমন একটি সেবা যার প্রাপ্তির সময়সীমা খুবই সীমিত। স্ট্রোক হওয়ার সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা যদি এই সেবা শুরু করতে না পারি। তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে না। এটা ঠিক যে, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। জনবলের সংকট। তবে আমরা যেহেতু একবার শুরু করছি, ধীরে ধীরে জনবলসহ সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিব। প্রাথমিকভাবে আমাদের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের চিকিৎসকদের কাজে লাগাবো। সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিচ্ছি।
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারহানা মোছলেহ উদ্দিন বলেন, স্ট্রোক ইউনিটের মাধ্যমে অত্যাধুনিক থ্রম্বোলাইসিস চিকিৎসার মাধ্যমে স্ট্রোকজনিত মৃত্যুহার এবং শারীরিক অক্ষমতা অনেকাংশে কমে আসবে।
নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহাবুবুল আলম খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ হাছান চৌধুরী, রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার, নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এসএম নোমান খালেদ চৌধুরী ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. শওকত হোসেন ও অনুষ্ঠানে প্রয়াত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমানের বাবা মাহফুজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক আফতাবুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. রাজিব পালিত, নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, ডা. শিউলি মজুমদার, ডা. পঞ্চানন দাশ, সহকারী অধ্যাপক ডা. মশিহুজ্জামান আলফা, ডা. মো. তৌহিদুর রহমান, ডা. মো. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. জামান আহম্মদ, ডা. মো. একরামুল আযম শাহেদ, কনসালটেন্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার, সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. হুমায়ুন কবির ও বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. পীযুষ মজুমদার প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার বিভাগে নতুন মৃত্যু নেই
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত ৯ মৃত্যু ১